শিরোনাম
বুধবার, ১২ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

চিকিৎসা যখন ব্যবসা

স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইনে পরিবর্তন প্রয়োজন

শিক্ষা, স্বাস্থ্য, রাজনীতি এক সময় সেবার ক্ষেত্র ছিল। জনসেবার মহান ব্রত নিয়ে আসতেন আদর্শবান মানুষ। আজ আর নেই। সরকারি হাসপাতালে অব্যবস্থাপনা, সংকট ও নানা সীমাবদ্ধতার কারণে সারা দেশে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে অসংখ্য হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার। ঢাল নেই তলোয়ার নেই, নিধিরাম সর্দারের মতো- ডাক্তার-নার্স নেই, আধুনিক যন্ত্রপাতি নেই, শুধু ঝকঝকে অবকাঠামো দেখিয়ে এক-একজন ব্যবসায়ী হাসপাতালের অনুমোদন পেয়ে যাচ্ছেন। তারাই  স্বাস্থ্যসেবাকে  অনেকাংশে বাণিজ্যে পরিণত করেছেন। অন্যদিকে রোগীর সেবায় সামর্থ্যরে সর্বোচ্চ চেষ্টা করাই চিকিৎসকের পবিত্র শপথ এবং কর্তব্য হলেও তাদের অবহেলা বা ভুল চিকিৎসা আর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনায় প্রায়ই রোগীদের দুর্ভাগ্যজনক মৃত্যু ঘটছে। গত ১ জুন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর পল্লবীর এক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন এক অন্তঃসত্ত্বা নারী। ব্যাংক কর্মকর্তা ওই তরুণী চিকিৎসকদের অবহেলা এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের চরম অব্যবস্থাপনার শিকার হয়ে মারা যান। সামান্য খতনা করাতে গিয়ে শিশুর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে রাজধানীর এক হাসপাতালে। এমন অসংখ্য অনভিপ্রেত মৃত্যুর তথ্য ছড়িয়ে রয়েছে পত্রপত্রিকায়। তবু এসব অনুচিত মৃত্যুর কোনো প্রতিকার হয় না। কারণ, চিকিৎসায় অবহেলাজনিত কারণে মৃত্যুর ঘটনায় অভিযোগ করার একমাত্র জায়গা বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল বা বিএমডিসি। তারাই অভিযোগ তদন্ত করেন। সেই তদন্ত কমিটিতে চিকিৎসকরাই থাকেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অভিযোগ প্রমাণ হয় না। কোনো প্রতিকারও হয় না। সার্বিকভাবে দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপর তৈরি হয় আস্থাহীনতা। ফলে যাদের ন্যূনতম সমর্থ আছে- তারা চিকিৎসার জন্য বিদেশে যান। দেশ মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা হারায়। এই প্রেক্ষাপটে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী বা হাসপাতালের গাফিলতিতে কোনো রোগীর মৃত্যু হলে তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। প্রয়োজনে স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইনে পরিবর্তন আনার বিষয়ে বিবেচনা করতে হবে। বাণিজ্য নয়, সেবার মহান মর্যাদা ফিরে পাক স্বাস্থ্য খাত-এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

সর্বশেষ খবর