রবিবার, ১৬ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

বিপর্যস্ত পুঁজিবাজার

বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধতে হবে

প্রায় এক যুগ ধরে দেশের শেয়ারবাজার উত্থান-পতনের ভিতর দিয়ে যাচ্ছে। নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা যদিও বলে, পুঁজিবাজারে উত্থান-পতন স্বাভাবিক বিষয়, কিন্তু বিনিয়োগকারীদের অভিযোগ- কৃত্রিমভাবে সংকট তৈরি করা হচ্ছে। দেশের শেয়ারবাজারে কারসাজির অভিযোগ নতুন নয়। বড় কেলেঙ্কারি ঘটে ১৯৯৬ ও ২০১০ সালে। তখন লাখ লাখ বিনিয়োগকারী সর্বস্বান্ত হন। বড় ধরনের উত্থান-পতনের পেছনে বিশেষ মহলের কারসাজি কাজ করে। ১৯৯৬ সালের কেলেঙ্কারির ঘটনায় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ১৫টি মামলা হলেও তার কোনো সুফল মেলেনি। ২০১০-এ বড় পতনের পর কারণ অনুসন্ধানে সরকার যে তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল তার প্রধান ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ। তিনি বলেছিলেন, কারসাজির কারণে শেয়ারবাজারে বিপর্যয় হয়েছিল। তার তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করলেও কোনো সুপারিশ বাস্তবায়ন করা হয়নি। কারসাজির হোতারা সব সময়ই ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। তারাই বারবার কলকাঠি নাড়ছে। অনিয়ম দুরাচার চলছেই। সাম্প্রতিক তথ্য হচ্ছে- টানা দরপতনে শেয়ারবাজার তলানির দিকে। বিনিয়োগকারীরা পুঁজি হারিয়ে দিশাহারা। বিদেশিরাও শেয়ার বিক্রি করে চলে যাচ্ছেন। ব্রোকারেজ হাউস, মার্চেন্ট ব্যাংক, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরাও ক্ষতিগ্রস্ত। বড় রকমের আস্থার সংকট শেয়ারবাজারে। প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নিশ্চিত করা যায়নি বলে বাজার নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হচ্ছে না। প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোক্তারা সরে যাওয়ায় তারল্য সংকট তৈরি হচ্ছে শেয়ারবাজারে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশন বিশেষ পদক্ষেপ নিলে কিছুটা ইতিবাচক ফলাফল লক্ষ্য করা গিয়েছিল। কিন্তু তা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি শেয়ারবাজার। কারণ কারসাজির হোতাদের ক্ষমতার শেকড় অত্যন্ত গভীরে প্রোথিত। সেই ’৯৬ থেকেই নানা সময় এদের ষড়যন্ত্রে লাখো বিনিয়োগকারী চরম ক্ষতির শিকার হলেও কোনো সুরাহা হয়নি। কারণ বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধবে কে- এ প্রশ্নের মীমাংসা হয়নি। দেশের অর্থনীতি, সরকারের ভাবমূর্তি- কোনো কিছুর জন্যই এটা ভালো কথা নয়। এ বিষয়ে সরকারকে সক্রিয় হতে হবে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর