অতিবৃষ্টি, বন্যা, পাহাড়ধস আমাদের নিয়তির সঙ্গে লেখা হয়ে আছে। এসবের অভিঘাত থেকে যেন মুক্তি নেই। বর্ষার শুরুতেই কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি এবং উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যা দেখা দিয়েছে। সোমবার ঈদের দিনই ভারী বৃষ্টিতে ডুবেছে সিলেট। আনন্দ ভেসে যায় বৃষ্টির পানিতে। সিলেটের সব উপজেলাতেই পানি ঢুকেছে। বন্যার্ত মানুষের সংখ্যা প্রায় ৭ লাখ। পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রামেও ভারী বৃষ্টি ও ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে। কুড়িগ্রামে বৃষ্টির সঙ্গে উজানের ঢলে নদনদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। জেলার প্রধান নদনদীর মধ্যে তিস্তা, দুধকুমারসহ অন্যান্য নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এসব নদীসংলগ্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। সেই সঙ্গে দেখা দিয়েছে ভাঙন। ইতোমধ্যে বেশ কিছু পরিবার ঘরবাড়ি হারিয়ে স্কুল ও আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। আগাম বন্যার পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়। দ্রুত বন্যার্তদের উদ্ধার এবং প্রয়োজনীয় ত্রাণ বরাদ্দের ব্যবস্থা নিতে হবে এখনই। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় মাঠপর্যায়ের প্রশাসনকে তৎপর থাকতে হবে। বিপদগ্রস্তদের উদ্ধার এবং দুর্ভোগ লাঘবে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাতে হবে। শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও জরুরি ওষুধ সরবরাহের ব্যবস্থা করতে হবে। না হলে চরম দুর্ভোগের শিকার হবে বানভাসি মানুষ। কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড় ধসে নয়জনের প্রাণহানি ঘটেছে। পাহাড়ধস একটা আতঙ্কের নাম। প্রতি বছরই এতে মানুষের মৃত্যু হয়। টানা বৃষ্টিতে পাহাড়ধস এবং তাতে প্রাণহানি নিয়মিত ঘটনা হলেও পাহাড় কাটা বন্ধ হচ্ছে না; অবৈধভাবে দখল করে, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে বসবাসও। অথচ এতে প্রাণহানির পাশাপাশি পাহাড় উজাড় এবং পরিবেশ বিপন্ন হচ্ছে। এসব বন্ধে টেকসই, স্থায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।