শুক্রবার, ২১ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

চামড়া নৈরাজ্য

প্রয়োজন তদারকি ও নিয়ন্ত্রণ

কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। সিন্ডিকেটের খপ্পরে পশুর চামড়া। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী চামড়া নিয়ে সিন্ডিকেট সহ্য করা হবে না বললেও-পাত্তা দিচ্ছে না কেউ। ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না বিক্রেতারা। লাখ টাকায় কেনা গরুর চামড়া বিক্রি করতে হয়েছে ৩০০ টাকায়। ছাগলের চামড়া ১০ থেকে ১৫ টাকায়। অনেকে রাগে-ক্ষোভে-দুঃখে চামড়া বিক্রির বদলে ফেলে দিয়েছেন। কোরবানির চামড়ার এ দুর্দশা কেন? এ প্রশ্নের জবাবে ব্যবসায়ীদের অজুহাতের শেষ নেই। আড়তদারদের বক্তব্য, লবণের দাম বেড়েছে। প্রতিটি চামড়ায় নাকি প্রায় ৩০০ টাকার লবণ লাগে। চামড়ায় লবণ মাখানো শ্রমিকের মজুরি হয়েছে দ্বিগুণ। ট্যানারি মালিকদের ভাষ্য, লবণযুক্ত ভালোমানের চামড়া সরকার নির্ধারিত দামে কেনা গেলেও, লবণ ছাড়া চামড়ার দামের কোনো নিশ্চয়তা নেই। দেশের প্রায় সর্বত্র কোরবানির চামড়ার দুর্দশা এমনই। দীর্ঘদিন ধরে এমনটাই চলছে। অথচ কোরবানির চামড়ার সিংহভাগ যায় দেশের বিভিন্ন মসজিদ, মাদরাসা ও এতিমখানায়। ধর্মপ্রাণ মানুষ এতিম শিশুদের সাহায্যের উদ্দেশে চামড়া দান করেন। কিন্তু মৌসুমি খুচরা ক্রেতা থেকে আড়তদার বা ট্যানারি মালিকরা প্রতি বছর এমন হতাশাজনক ‘গেল গেল’ রব তোলেন যে, পানির দামে তাদের হাতে চামড়া তুলে দিতে হয়। বঞ্চিত হয় মসজিদ, মাদরাসা, এতিমখানা। প্রাপ্য হক থেকে বঞ্চিত হয় অসহায় এতিমরা। দাতার সৎ উদ্দেশ্য পণ্ড হয় কুচক্রীদের চক্রান্তে। সরকার যে সদিচ্ছা নিয়ে কোরবানির চামড়ার দাম বেঁধে দেয়-সে উদ্দেশ্য ভেস্তে যায়। এর প্রতিকার প্রয়োজন। ট্যানারি মালিকরা কৌশলে চামড়ার দাম কমিয়ে লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের চামড়াশিল্প। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে কাঁচা চামড়া রপ্তানি এবং এ শিল্পে বিদেশি বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টির বিষয়ে ভাবা যেতে পারে। তাতে ট্যানারি মালিকদের একচেটিয়া দৌরাত্ম্যের অবসান হবে, যেটা খুব জরুরি। আর শুধু দাম বেঁধে দিলেই চলবে না, নির্ধারিত দামে কেনাবেচার বিষয়টি তদারকি এবং নিয়ন্ত্রণও করতে হবে সরকারকে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর