শনিবার, ২২ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

বিদেশে অর্থ পাচার

সরকারকে কড়া হতে হবে

বাংলাদেশে নুন আনতে পানতা ফুরায় এমন লোকের সংখ্যা কম নয়। কিন্তু সব সম্ভবের এই দেশে কোটিপতির সংখ্যা বাড়ছে স্পুটনিক গতিতে। দেশের উন্নতি হলে লাভবান হয় সর্বস্তরের মানুষ। সে হিসেবে প্রতিবছর দারিদ্র্যমোচনও হচ্ছে অঙ্কের হিসাবে। তবে সে ক্ষেত্রে রয়েছে শম্ভুক গতি। ফলে বাড়ছে ধনী গরিবের বৈষম্য। দুর্নীতিবাজ আমলা, অসৎ রাজনীতিক ও দেশপ্রেমবর্জিত ব্যবসায়ীরা যে তাদের কালো টাকা বিদেশে পাচার করেন, এটি একটি ওপেন সিক্রেট। একজন সাবেক পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রীর মতে, বছরে পাচার অর্থের পরিমাণ ৭/৮ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশে মুদ্রায় যার পরিমাণ সাড়ে ৮ থেকে ১০ লাখ কোটি টাকা। প্রতিবছর যে জাতীয় বাজেট প্রণয়ন করা হয়, পাচার করা অর্থের পরিমাণ তার চেয়েও বেশি। সারা দুনিয়ার চোর-মহাচোরদের মতো বাংলাদেশের তাদের সমগোত্রীয়রা পাচারকৃত অর্থের একাংশ সুইস ব্যাংকে জমা রাখতেন। কারণ সুইচ ব্যাংক তাদের অ্যাকাউন্টের গোপনীয়তা রক্ষা করত। কিন্তু তারা সে অবস্থান থেকে সরে আসায় সারা দুনিয়ার লুটেরারা তাদের আমানত অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে। একই পথ বেছে নিয়েছে বাংলাদেশি চোর-মহাচোররাও। মাত্র এক বছরের ব্যবধানে সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকে বাংলাদেশিদের আমানত কমেছে ৩ কোটি ৫৭ লাখ ফ্রাঁ। ২০২২ সালে ব্যাংকটিতে বাংলাদেশি পরিচয়ধারীদের আমানত ছিল ৫ কোটি ৫২ লাখ সুইস ফ্রাঁ। গত বছর তার পরিমাণ কমে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৭৭ লাখ ফ্রাঁয়। চমকে ওঠার তথ্য হলো, ব্যাংকটিতে ২০২১ সালে বাংলাদেশিদের আমানত ছিল ৮৭ কোটি ২১ লাখ ফ্রাঁ। প্রতি ফ্রাঁ যেহেতু বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৩২ টাকার সমান, সেহেতু সে সময় বাংলাদেশিদের আমানত ছিল প্রায় ১১ হাজার ৫১২ কোটি টাকা। বাংলাদেশ থেকে বিদেশে যে অর্থ পাচার হয় তা দেশে থাকলে প্রতিবছর লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হতো। দারিদ্র্যের হার শূন্যে নেমে আসত। পাচার বন্ধে সরকারকে কথায় নয় কাজে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করতে হবে। বন্ধ করতে হবে দেশে অবৈধ পথে অর্থ অর্জনের পথ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর