রবিবার, ২৩ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

সোনা চোরাচালান

ভূত তাড়ানোর শর্ষেতেই ভূত

সোনা চোরাচালান বাংলাদেশের অর্থনীতিকেই ফোকলা করে দিচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রধানত আকাশপথে চোরাচালানের মাধ্যমে আসছে সোনা। এ সোনার প্রায় সবটাই পাচার হয়ে যাচ্ছে প্রতিবেশী ভারতে। ভারত থেকে সে সোনার মূল্য বাবদ চোরাচালান হয়ে আসছে বিভিন্ন পণ্য। পরিণতিতে সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ভারতে সোনা আমদানিতে রয়েছে উচ্চ শুল্কহার। চোরাচালানের মাধ্যমে আকাশপথে সোনা প্রবেশের সুযোগও প্রায় শূন্য। কারণ বাংলাদেশের মতো ভারতের বিমানবন্দরগুলোয় ‘থিপ অব বাগদাদের’ রাজত্ব নেই। তাই বাংলাদেশকে বেছে নেওয়া হচ্ছে নিরাপদ রুট হিসেবে। বিমানবন্দরে দেনদরবারে হেরফের হলে কিছু সোনা আটক করে নিজেদের কর্মদক্ষতা দেখানোর চেষ্টা চলে। বাস্তবে অহরহই আসছে গাদাগাদা সোনা। সে সোনা দেশের দীর্ঘ সীমান্ত এলাকা দিয়ে পাচার হয়ে যাচ্ছে ভারতে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের শীর্ষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী এলাকা পরিণত হয়েছে সোনা চোরাচালানের অভয়ারণ্যে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, যশোর ও সাতক্ষীরা জেলার সীমান্ত দিয়ে সোনা পাচারের একাধিক সিন্ডিকেট সক্রিয়। সাম্প্রতিককালে ভারতে পাচারের সময় এসব এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে অন্য সীমান্তের চেয়ে বেশি সোনা জব্দ হয়েছে। তবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, সোনার সঙ্গে যাদের আটক করা হয়েছে তাদের ‘বাহক’ বলছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সিন্ডিকেটের মূল হোতারা ধরা না পড়ায় বন্ধ হচ্ছে না চোরাচালান। অভিযোগ রয়েছে, সোনা চোরাচালানে জড়িত এলাকার প্রভাবশালীরা। চোরাচালানের কারণে বাংলাদেশ-ভারতের শান্তির সীমান্ত প্রায়ই অশান্ত হয়ে উঠছে। গুলি করে চোরাচালানি হত্যার ঘটনা দুই দেশের জনমনে ভুল বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে। সীমান্তবর্তী জেলাগুলোর রাজনীতিও জিম্মি হয়ে পড়েছে সোনা এবং মাদক চোরাকারবারিদের কাছে। ডলার সংকট থেকে পরিত্রাণ পেতে সোনা চোরাচালান বন্ধে উদ্যোগী হতে হবে। বিমানবন্দর ও স্থলসীমান্ত-দুই দিকেই রাখতে হবে কড়া নজর। ভূত তাড়ানোর শর্ষেতে ভূত থাকায় বন্ধ হচ্ছে না চোরাচালান। এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতেই হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর