রবিবার, ২৩ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

ধেয়ে আসছে বন্যা

দুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে হবে

নদীমাতৃক বাংলাদেশ। গাঙ্গেয় ব-দ্বীপ এলাকায় এর অবস্থান। দেশের মধ্য দিয়ে ছোটবড় প্রায় ২৩০টি নদী বয়ে গেছে; যাদের গন্তব্য বঙ্গোসাগর। উজান থেকে আসা ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতে প্রায় প্রতি বছরই বর্ষাকালে ছোট থেকে মাঝারি আকারে বন্যা হয়। ১৯৮৮, ১৯৯৮ ও ২০২২ সালে ব্যাপক ধ্বংসাত্মক বন্যা হয়েছিল। প্রকৃতির এ রুদ্ররোষের কাছে মানুষ অসহায়। বন্যা শতভাগ প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। এবারও বর্ষা মৌসুম শুরু হতে না হতেই দেশের বিভিন্ন এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে। অতিবৃষ্টি ও উজানের পাহাড়ি ঢলের প্রভাবে সিলেট, সুনামগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, নেত্রকোনা, রংপুর, গাইবান্ধা, লালমনিরহাটসহ বিভিন্ন জেলার অধিকাংশ নদনদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বিস্তীর্ণ এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। লাখ লাখ মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। তাদের ভোগান্তির অন্ত নেই। শিশু-বৃদ্ধ-নারী এবং গবাদি পশু নিয়ে চরম অসহায় অবস্থায় পড়েছে অসংখ্য পরিবার। ন্যূনতম খাবার, বিশুদ্ধ পানি এবং জরুরি ওষুধের সংকটে তারা নাজেহাল। সেই সঙ্গে রয়েছে পানিবাহিত বিভিন্ন রোগ ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা। দুর্গত এলাকায় স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও তদারকি করছে। প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী নিয়ে বানভাসি ও পানিবন্দিদের সহায়তায় সক্রিয় রয়েছে তারা। কিন্তু তা পর্যাপ্ত নয়। শুধু সরকার বা তার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ই নয়, এ ক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে হবে বিভিন্ন সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং সমাজের বিত্তশালী মহলকেও। সবার সমন্বিত প্রচেষ্টায় বন্যার্তদের টিকে থাকার লড়াইয়ে শক্তি জোগাতে হবে। কৃষি পুনর্বাসন ও মানবিক সহায়তা কর্মসূচি নিয়ে বানভাসিদের শস্য-সম্পদ হারানোর ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি তাদের ঘরবাড়ি মেরামত করে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগও করে দিতে হবে। প্রস্তুতি নিতে হবে পরবর্তী যে কোনো দুর্যোগ পরিস্থিতি দ্রুত মোকাবিলার। দুর্গতদের পাশে দাঁড়ানো এখন সমাজের সবার প্রধান কর্তব্য।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর