সোমবার, ২৪ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

ঝুঁকিপূর্ণ সেতু

কর্তাব্যক্তিদের টনক নড়ুক

‘জন্মিলে মরিতে হবে’-এর চেয়ে বড় সত্যি আর কিছু নেই। তাই বলে কারোরই অসময়ে অপঘাত মৃত্যু কাক্সিক্ষত নয়। বরগুনার আমতলীতে একটি ঝুঁকিপূর্ণ সেতু আচমকা কেড়ে নিল ১১টি তাজা প্রাণ। মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটা ঘটে শনিবার দুপুরে। এলাকার হলদিয়াহাটে লোহার ব্রিজ ভেঙে মাইক্রোবাস নদীতে পড়ে ১১ যাত্রী নিহত হন। এদের মধ্যে সাতজন একই পরিবারের। তারা একটা বউভাতের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। সে আনন্দযাত্রা মুহূর্তে চরম বিষাদে রূপ নেয়। শিশু-নারীসহ প্রাণবন্ত মানুষগুলো লাশ হয়ে যায় চোখের পলকে। গোটা এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া। আমরাও গভীর শোকাহত। ভেঙে পড়া সেতুটি ভারী যান চলাচলের উপযোগী ছিল না। কয়েক বছর আগেই এটা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছিল। সে কারণেই এ সর্বনাশা দুর্ঘটনা ঘটেছে। স্বভাবতই প্রশ্ন ওঠে এ মৃত্যুর দায় কার? স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট সব সংস্থা ও বিভাগের কি দায় অস্বীকারের কোনো সুযোগ আছে? এ প্রশ্নের সোজাসাপ্টা উত্তর- না, নেই। দেশের সাধারণ মানুষের কাছ থেকে এতটা সচেতনতা আশা করা যায় না, যে তারা ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়ে চলাচল করবেন না। তাদের জানার কথাও না যে, কোন সেতু কত দুর্বল, কতটা ঝুঁকিপূর্ণ। সংশ্লিষ্টদের উচিত ছিল- এমন প্রাণঘাতী দুর্ঘটনার আগেই সেতুটা বন্ধ করে দেওয়া। তাহলে এতগুলো প্রাণহানি এড়ানো যেত। সারা দেশের সড়ক-মহাসড়কে অসংখ্য সেতু-কালভার্ট রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায়। যেগুলোর যে কোনোটিতে, যে কোনো সময় ঘটতে পারে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। সংশ্লিষ্ট বিভাগের নজরে আনার পর ১২ বছরেও সংস্কার হয়নি-এমন সেতুর খবর প্রকাশিত হয়েছে পত্রিকায়। কোথাও বা ‘ঝুঁকিপূর্ণ সেতু’ নোটিস টাঙিয়ে কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব শেষ করেছে। চলাচল বন্ধ বা নতুন সেতু নির্মাণ করা হয়নি। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় মানুষ ঝুঁকি নিয়ে এগুলোই ব্যবহার করতে বাধ্য হয়। সেই ঝুঁকি কখনো মৃত্যুর সমন নিয়ে হাজির হয়। যেমনটা শনিবার ঘটেছে। যে কোনো মানুষের এমন অপঘাত মৃত্যু কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। এই অনভিপ্রেত মৃত্যুর মিছিল ঠেকাতে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হোক। আশা করি এক্ষেত্রে দায়িত্বরত সবার টনক নড়বে।

সর্বশেষ খবর