বুধবার, ২৬ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

দুর্নীতির রাহুগ্রাস

ওদের থাবা ভাঙতে হবে

সরকারি আমলা ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতি সারা দেশের প্রধান আলোচ্য বিষয়ে পরিণত হয়েছে। দেশবাসীর ট্যাক্সের টাকায় পোষা হয় প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের। কিন্তু দেশবাসীর প্রতি তাদের আচরণ প্রভুসুলভ। কর্মচারী যখন প্রভুর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় তখন দেশবাসীর অবস্থা কী দাঁড়ায় তা একটি বড় মাপের প্রশ্ন। বলা হয়ে থাকে দেশের এমন কোনো সরকারি দফতর নেই যেখানে দুর্নীতি নেই। উৎকোচ ছাড়া সরকারি অফিসে কাজ হয় না এটি একটি সর্বজনস্বীকৃত অভিজ্ঞতা। সরকারি চাকরিজীবীদের মধ্যে কেউ সৎ নেই এমনটি বলা হবে সত্যের অপলাপ। তবে তাদের সংখ্যা এতই কম যে সে ক্ষেত্রে হয়তো দুরবিন কিংবা অনুবীক্ষণ যন্ত্রের আশ্রয় নিতে হবে। দেশে এখন ৭-৮ লাখ কোটি টাকার বাজেট তৈরি হয় জনগণের দেওয়া ট্যাক্স এবং ব্যাংক ঋণ ও বৈদেশিক ঋণের ওপর ভিত্তি করে। আগামী অর্থবছরের জন্যও প্রায় ৮ লাখ কোটি টাকার মেগা বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে এবং তা এখন সংসদে অনুমোদনের অপেক্ষায়। এ বাজেটের সিংহভাগ ব্যয় হবে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের বেতন ভাতা সুযোগ-সুবিধা এবং অন্যান্য খাতে। বাজেটের এক অতি ক্ষুদ্র অংশ ব্যয় হয় উন্নয়ন বাজেট হিসেবে। প্রতি বছর উন্নয়ন বাজেটের এক বড় অংশ বাস্তবায়িত হয় না প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের গাফিলতির কারণে। আর যেগুলো বাস্তবায়িত হয় সেগুলোর বাস্তবায়নে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী নামধারী প্রভু-মহাপ্রভুদের উৎকোচের চাহিদা মেটাতে গিয়ে কাজের কোনো মান থাকে না। প্রতি বছর প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের অসৎ অংশ যে লুটপাট করেন তার পরিমাণ অন্তত দুই থেকে তিন লাখ কোটি টাকা। সাম্প্রতিক সময়ে মাত্র তিন-চারজনের সম্পদের যে তালিকা ফাঁস হয়েছে তা ভিরমি খাওয়ার মতো। আমাদের এই ভূখণ্ডে দুর্নীতি ছিল সেই আদিকালেও। দুর্নীতি ছিল পাঠান-মুঘল-ব্রিটিশ-পাকিস্তানি শাসনামলেও। আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্বপ্ন ছিল একটি দুর্নীতিমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা। কিন্তু সে স্বপ্ন থেকে দেশ যে বহু দূরে তা স্পষ্ট। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের দুর্নীতির কারণে দেশের আর্থসামাজিক ব্যবস্থায় অসন্তুষ্টি বাড়ছে। তা ঠেকাতে নিজেদের স্বার্থেই সরকার দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর হবে এমনটিই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর