বুধবার, ২৬ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

সড়কে টার্মিনাল

শেষ হোক জনভোগান্তি

তখন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন মেয়র আনিসুল হক। ২০১৫ সালের নভেম্বরে তিনি ‘তেজগাঁও সাতরাস্তা-রেলগেট’ সড়ক থেকে অবৈধ ট্রাকস্ট্যান্ড উচ্ছেদ করেন। গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কের দুই পাশে দিনরাতে অসংখ্য ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ড ভ্যান দাঁড় করিয়ে রাখা হতো। যানজট ছিল নিত্যকার চিত্র। জনগণের ভোগান্তি ছিল অনিবার্য। মেয়র আনিস গাবতলী-আমিনবাজার সড়কের অবৈধ পার্কিংও উচ্ছেদ করেন। এমন বেশ কিছু যুগান্তকারী কাজ করেছিলেন তিনি; যেগুলো করতে তাকে বেশ বেগ পেতে হয়েছিল। সুযোগসন্ধানী অপচক্রের শক্ত বাধা মোকাবিলা করতে হয়েছিল। আরও অনেক কিছু করার ইচ্ছাও ছিল তার। অসময়ে আকস্মিক মৃত্যুতে যা করে যেতে পারেননি। মেয়র আনিসুল হকের মৃত্যুর পর তেজগাঁও সাতরাস্তা-রেলগেট সড়ক ফের অবৈধ ট্রাক স্ট্যান্ডে পরিণত হয়। গাবতলী-আমিনবাজারের অবস্থাও তথৈবচ। যেন এসব দেখার কেউ নেই। একই প্রক্রিয়ায় বর্তমানে যাত্রাবাড়ী থেকে ধোলাইপাড় পর্যন্ত সড়কটি অবৈধ বাস টার্মিনালে পরিণত হয়েছে। চালকরা যথেচ্ছভাবে সড়কের দুই পাশে গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখেন। যাত্রাবাড়ী থেকে ধোলাইপাড় ফুটপাতে এবং একটা পাম্প স্টেশনের ভিতরে-বাইরে গড়ে তোলা হয়েছে বিভিন্ন বাসের কাউন্টার। এসব কাউন্টারে দুই তিন সারি করে বাস দাঁড়িয়ে থাকে। যাত্রী তোলা হয়। সড়কে তৈরি হয় দীর্ঘ যানজট। চলাচলকারীদের ভোগান্তির শেষ থাকে না। খোদ রাজধানীতে সংশ্লিষ্ট সব প্রশাসনের চোখের সামনে এমন অবৈধ কর্মকাণ্ড কীভাবে চলতে পারে- বড় মাপের একটি প্রশ্ন। সড়ককে টার্মিনাল বানানোর বৈসাদৃশ্য শুধু যাত্রাবাড়ী নয়, রাজধানীর অন্যত্রও কম নয়। শক্ত হাতে নিয়ন্ত্রণ করা উচিত সড়ক-ফুটপাতের অবৈধ দখলদারদের। জবাবদিহির আওতায় আনা হোক তাদের মদদদাতাদেরও। এসব ক্ষেত্রে আসলে প্রয়োজন এক-একজন আনিসুল হকের। যারা অল্প কদিনের কাজের মাধ্যমে, অল্প কদিন বেঁচেও অমর হতে পারেন। মানুষের মনে শ্রদ্ধার স্থায়ী আসন পেতে পারেন। কিন্তু আজকের সমাজে, সেই সদিচ্ছা, সাহসী সংকল্প আর সৎ ও সুন্দরের স্বপ্ন দেখা মানুষের অভাব। তবু আমরা আশা পুষে রাখি। কর্তৃপক্ষ সক্রিয় হোক, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর