শিরোনাম
শুক্রবার, ২৮ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

সম্পদের হিসাব

কর্মচারীদের দুর্নীতি বন্ধ হোক

রাজনৈতিক নেতৃত্বের গাফিলতিতে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা দেশের মালিক মোক্তার বনে গেছেন বললেও ভুল হবে না। তাদের দুর্নীতিও আকাশছোঁয়ার অপেক্ষায়। সংবিধান অনুযায়ী অফিস সহকারী বা পিয়ন থেকে সচিব পর্যন্ত সবাই প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। জনগণের টাকায় তারা বেতন পান। তাদের আনুগত্য থাকা উচিত দেশের ১৮ কোটি মানুষের প্রতি। কিন্তু রাজনৈতিক নেতৃত্বের গাফিলতিতে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা কার্যত নিজেদের প্রজাতন্ত্রের মালিক মোক্তার ভাবা শুরু করেছেন বহু আগে থেকে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে দেশে সেনাপতি শাসন কায়েম হয়। সেনাপতি নামের প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা দেশের মালিক মোক্তার বনে যায়। সেনাপতি শাসন রোধে দেশে আইন পাস হলেও আমলা বা সরকারি কর্মকর্তা নামের প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের দৌরাত্ম্য থামানোর কোনো বিধান জারি হয়নি। ফলে যা ইচ্ছা তাই করার সুযোগ পাচ্ছেন তারা। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের দুর্নীতি দেশবাসীর পকেট কাটছে। অবৈধ পথে উপার্জিত অর্থের একাংশ বিদেশে পাচার হওয়ায় দেশের অর্থনীতি খাদের কিনারায় চলে যাচ্ছে। কানাডা, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কাতারসহ বহু দেশে বাংলাদেশের কর্মচারীকুলের সম্পদের পরিমাণ কয়েক লাখ কোটি টাকার মতো। অভিযোগ রয়েছে, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের দুর্নীতি ও লুটপাটের পেছনে রাজনীতিকদের আশ্রয়-প্রশ্রয় অনেকাংশে দায়ী। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের জনগণের প্রভু বনে যাওয়ার ধৃষ্টতা এবং উৎকোচের মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়া বন্ধে রাজনীতির দুর্বৃত্তায়নে লাগাম টেনে ধরতে হবে। সরকারি চাকরিপ্রার্থী ও পরিবারের সদস্যদের সম্পদের হিসাব নেওয়া এবং প্রতি বছর সে হিসাব যাতে হালনাগাদ হয় তা নিশ্চিত করা জরুরি। এটি সম্ভব হলে ভবিষ্যতে বেনজীর, মতিউর-কাণ্ডের লাগাম টানা সম্ভব হবে। বিশেষ করে রাজনীতিতে দুর্বৃৃত্তায়ন বন্ধ হলে সৎ রাজনীতিকদের রাজনীতি করার অধিকার নিশ্চিত এবং অসৎদের সংসদে যাওয়া বন্ধ হবে। রাজনৈতিক দলে পোড় খাওয়া রাজনীতিকদের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা পাবে। দেশের জনগণকে লুটেরাদের কবল থেকে রক্ষায় রাজনীতিকদের ভ্যানগার্ডের ভূমিকা পালন করার সুযোগ মিলবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর