শনিবার, ২৯ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

চাল নিয়ে চালবাজি

প্রতারক চক্রকে দমন করুন

আমাদের মানবিক মূল্যবোধের এমন অবক্ষয় ও অবনতি হয়েছে যে, জঘন্য জালিয়াতির মাধ্যমে জনগণের সঙ্গে প্রতারণায় কোনো খাত বা কোনো পণ্যই আজ আর বাদ যাচ্ছে না। অসততা এমন নিষ্ঠুর পর্যায়ে পৌঁছেছে- যে ভাত ছাড়া বাঙালির চলে না, সেখানেও কালো হাতের থাবা বসিয়েছে অসাধু চক্র। দেশজুড়ে চলছে তাদের চরম অবৈধ কর্মকাণ্ড। মোটা চাল নিয়ে করা হচ্ছে ক্ষমার অযোগ্য প্রতারণা। অশুভ চক্রের অপকৌশলে বি-২৮ হয়ে যাচ্ছে কুলিন জাতের মিনিকেট। বি-২৯ হচ্ছে পাইজাম বা নাজিরশাইল। প্রতি কেজিতে দাম বেড়ে যাচ্ছে অন্তত ১০ টাকা। বেশি দামে বিক্রির জন্যই মোটা চাল ছাঁটাই করে চিকন এবং পালিশ করে উজ্জ্বল করা হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন লাখ লাখ টন চালের একটা অংশের অপচয় হচ্ছে, অন্যদিকে নষ্ট হচ্ছে খাদ্যমান। বেশি ঘষে ফেলায় চালের ভিটামিন, মিনারেল ও ফাইবারের গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান কমে, পড়ে থাকছে শুধু কার্বোহাইড্রেডের অংশ। ভোক্তাদের প্রাপ্য পুষ্টি থেকে বঞ্চিত করার এই প্রতারণা অমার্জনীয় অপরাধ। অথচ দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশ কিছু নামি রাইস মিলেও এ অপরাধ কর্মকাণ্ড চলে আসছে। এই প্রক্রিয়ায় চিকন চালের দাম বেশি হওয়ায় তার প্রভাবে সব চালের দামই দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। সরকার মোটা চাল চিকন করার অপতৎপরতার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। বিভিন্ন চালের মোকামের বড় বড় অটো রাইস মিলের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগে বিভিন্ন সময় অভিযান পরিচালনা করে তাদের বিরুদ্ধে জরিমানা ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এ ধরনের অভিযান ধারাবাহিকভাবে চালু রাখতে হবে। এদের ওপর সতর্ক পর্যবেক্ষণ ও নিবিড় তদারকি নিয়মিত কর্তব্যের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। খাদ্য অধিদফতর, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ এবং কৃষি বিপণন অধিদফতর সমন্বিত কর্মসূচির মাধ্যমে চাল নিয়ে চালবাজির প্রতারক চক্রকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করুক- এটাই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর