শিরোনাম
রবিবার, ৩০ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

বরেন্দ্র প্রকল্পে অনিয়ম

সমষ্টির স্বার্থ নিয়ে ছিনিমিনি নয়

কৃষি মন্ত্রণালয়ের বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-বিএমডিএ গড়ে উঠেছিল সংশ্লিষ্ট এলাকার উন্নয়নে। এ সংস্থা গভীর নলকূপের মাধ্যমে আবাদযোগ্য জমিতে কম খরচে সেচ সুবিধা দেয়। বাজারব্যবস্থার উন্নয়নে গ্রামীণ সংযোগ সড়ক নির্মাণও তাদের কাজ। পাশাপাশি প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় বনায়ন, কৃষি যান্ত্রিকীকরণ, বীজ উৎপাদন এবং শস্য বহুমুখীকরণ ছাড়াও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহও রয়েছে তাদের কর্মপরিকল্পনার মধ্যে। বিভিন্নমুখী উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর দারিদ্র্যবিমোচন ও জীবনযাত্রার মানোন্নয়নও তাদের লক্ষ্য। সাধারণভাবে বলা হয়, দেশের উত্তরাঞ্চলের কৃষিভান্ডার সমৃদ্ধ করছে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বর্তমানে নানা অনিয়মে আকণ্ঠ ডুবে আছে প্রতিষ্ঠানটি। এতে তার লক্ষ্য ব্যাহত হচ্ছে। কৃষকরা প্রাপ্য সহযোগিতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। চলতি বছরই এ প্রতিষ্ঠানের ১৩টি প্রকল্পে শত কোটি টাকা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। কৃষি ও পরিবেশ অডিট কার্যালয়ের দুটি দল বিষয়টি তদন্ত করছে। সংস্থাটির বিরুদ্ধে একসময় প্রায় ৪ হাজার অডিট আপত্তি ছিল। ২০১৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত টাকার অঙ্কে অডিট আপত্তির পরিমাণ ৩৫০ কোটি। অডিট আপত্তি মানেই অর্থ আত্মসাৎ- এ কথা শতভাগ সত্যি না হলেও সেখানে কিছু অনিয়ম, তছরুপ, নয়ছয় যে থাকেই; তা অস্বীকার করা যায় না। বিএমডিএ-এর প্রধান ত্রুটি, আইনগত বাধ্যতা থাকা সত্ত্বেও এর প্রধান কার্যালয়ের কর্তাব্যক্তিরা নিয়মিত বার্ষিক আয়-ব্যয়ের হিসাব প্রতিবেদন তৈরি করেন না। প্রতিষ্ঠানটির আয়-ব্যয়ের প্রকৃত চিত্র প্রকাশ পায় না। নানা কায়দায় প্রকল্পগুলো থেকে অর্থ আত্মসাৎ করা হয়। নিরীক্ষা প্রতিবেদনে তিন শতাধিক অনিয়মের উল্লেখ করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে নানা সাফাই গাওয়ার চেষ্টা করলেও যে কোনো অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা চরম দায়িত্বহীনতাই শুধু নয়, গর্হিত অপরাধ। সমষ্টির উন্নয়ন প্রচেষ্টার লক্ষ্যে নিবেদিত প্রতিষ্ঠানে গণমানুষের স্বার্থ নিয়ে এমন ছিনিমিনি খেলা চলতে পারে না। এদের যথাযথ নিয়মনীতি মেনে চলা উচিত। আর এক্ষেত্রে অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর