সোমবার, ১ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

উড়ালসড়কে স্থবিরতা

থমকে দেওয়া মেঘ কেটে যাক

তিন বিদেশি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের স্বার্থের দ্বন্দ্বে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ থমকে যাওয়া অত্যন্ত অনাকাক্সিক্ষত। মামলায় জড়িয়ে তারা এ মেগা প্রকল্পটিকে অনভিপ্রেত স্থবিরতার মুখে ঠেলে দিয়েছে। সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্পগুলোর একটি এই সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের প্রকল্প। বাংলাদেশ ছাড়াও চীনের দুটি এবং থাইল্যান্ডের একটি প্রতিষ্ঠান এতে বিনিয়োগ ও নির্মাণকাজের অংশীদার। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে কাওলা থেকে তেজগাঁও, মগবাজার, কমলাপুর হয়ে যাত্রাবাড়ীর কাছে কুতুবখালীতে গিয়ে শেষ হবে এ উড়ালসড়ক। দৈর্ঘ্য হবে প্রায় ২০ কিলোমিটার। এর সঙ্গে সংযুক্ত হবে ঢাকা-আশুলিয়া এক্সপ্রেসওয়ে। তখন দুটি প্রকল্প মিলে সাভার থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত প্রায় ৪৪ কিলোমিটারের উড়ালসড়ক পূর্ণাঙ্গ রূপ পাবে। যানজটের মহানগরী ঢাকার ওপর দিয়ে এই পথ পাড়ি দেওয়া যাবে এক ঘণ্টারও কম সময়ে। সাশ্রয় হবে অর্থেরও। যুগান্তকারী বিপ্লব ঘটে যাবে নিত্য যানজটে পেরেশান রাজধানীবাসীর জীবনে। পুরো প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে তা জিডিপিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। প্রধানমন্ত্রী গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর বিমানবন্দর থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত উড়ালসড়কের সাড়ে ১১ কিলোমিটার অংশের উদ্বোধন করেন। পরদিন থেকে যান চলাচল শুরু হয়। এরপর এ বছর ২০ মার্চ এফডিসিসংলগ্ন র‌্যাম্পও খুলে দেওয়া হয়। নিচের যানজট এড়িয়ে দ্রুত গন্তব্যে যাওয়ার সুযোগ পেয়ে যানবাহনের চাপ এবং মানুষের আগ্রহ বাড়ছে উড়ালসড়কে। যানজটের এ নগরীতে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিকল্প হয়ে উঠছে দ্রুতগতির এ উড়ালসড়ক। অর্ধেক চালু হওয়া এক্সপ্রেসওয়েতেই চলাচলকারী গাড়ি থেকে আদায় টোলের পরিমাণ দেখে মনে হচ্ছে, এটা বিনিয়োগকারীদের জন্য খুবই লাভজনক প্রকল্প হবে। চলতি বছরের মধ্যেই এ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিন শরিকের স্বার্থের দ্বন্দ্ব প্রকল্পটি যথাসময়ে শেষ হওয়ার ক্ষেত্রে জটিলতা তৈরি করেছে। এখন সেখানে বেশ খানিকটা অনিশ্চয়তার মেঘ দেখা যাচ্ছে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরোধের জেরে মামলা গড়িয়েছে উচ্চ আদালত পর্যন্ত। আমরা চাই বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তি হোক। অনেক মানুষের স্বপ্ন-আকাক্সক্ষা এবং কল্যাণ জড়ানো এর সঙ্গে। সংশ্লিষ্ট সব মহলের আন্তরিক প্রচেষ্টায় উদ্ভূত সংকটের সমঝোতা ও সমাধান হোক; এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কর্মযজ্ঞ পুরোদমে জোরদারভাবে চলুক, যথাসময়ে শেষ হোকÑ সেটাই কাম্য।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর