মঙ্গলবার, ২ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

শিক্ষক কর্মবিরতি

একপেশে সিদ্ধান্ত প্রত্যাশিত নয়

দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় অচল হয়ে পড়েছে শিক্ষকদের কর্মবিরতির কারণে। শিক্ষকরা এতদিন যে পেনশন ব্যবস্থার আওতায় ছিলেন তার বদলে সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করায় সভা-সমাবেশ, মানববন্ধন ও কর্মবিরতি পালন করছেন তারা। স্মর্তব্য, অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে, যেসব শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী চলতি বছরের ১ জুলাইয়ের পর থেকে যোগ দেবেন তাদের জন্য সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয় স্কিম’ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তাদের ক্ষেত্রে ওই প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার জন্য বিদ্যমান অবসর সুবিধাসংক্রান্ত বিধিবিধান প্রযোজ্য হবে না। শিক্ষকদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য যে প্রত্যয় স্কিম আরোপ করা হয়েছে, তা তাদের পারিবারিক সুরক্ষা নষ্ট করছে। এর ফলে মেধাবীরা আর শিক্ষকতা পেশায় আগ্রহী হবেন না। তাই সর্বজনীন পেনশন স্কিম বাতিলের দাবিতে রাস্তায় নেমেছেন তারা। প্রত্যয় স্কিমে মূল বেতন থেকে ১০ শতাংশ অর্থ কেটে নেওয়া হবে, যেটা আগে কাটা হতো না। বর্তমানে পেনশনার ও নমিনি আজীবন পেনশনপ্রাপ্ত হন; নতুন এ স্কিমে পেনশনাররা ৭৫ বছর পর্যন্ত পেনশন পাবেন। বিদ্যমান পেনশন ব্যবস্থায় ৫ শতাংশ হারে ইনক্রিমেন্ট পাওয়া যায়, সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় সেটিও সুস্পষ্ট করা হয়নি। চাকরির মেয়াদকাল ৬৫ থেকে ৬০ বছর করাও তাদের আপত্তির কারণ। মাসিক চিকিৎসা ভাতা, উৎসব ভাতা, বৈশাখী ভাতাও নতুন প্রত্যয় স্কিমে প্রদান করা হবে না বলে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। শিক্ষক ধর্মঘট বা কর্মবিরতির কারণে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে তা দুর্ভাগ্যজনক। শিক্ষকরা তাদের স্বার্থহানির যে কোনো পদক্ষেপের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবেন এতে আপত্তির কিছু নেই। যেহেতু নতুন পেনশন ব্যবস্থা শুধু ১ জুলাই থেকে যারা শিক্ষক পদে যোগ দিয়েছেন। সেহেতু এ ধরনের কর্মবিরতির যৌক্তিকতা নিয়ে সংশয় থাকাও স্বাভাবিক। আমাদের মতে, সর্বজনীন পেনশন স্কিম শুধু বিশ্ববিদ্যালয় নয়, সব নতুন সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হলে তা হতো আরও বেশি যৌক্তিক। কর্মবিরতি অবসানে একপেশে সিদ্ধান্তের ব্যাপারে সরকার শিক্ষকদের সঙ্গে সমঝোতায় আসবে এমনটিই প্রত্যাশিত।

 

 

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর