বুধবার, ৩ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

দুর্নীতিবিরোধী লড়াই

শ্বাপদদের শক্ত হাতে ধরতে হবে

দুর্নীতির বিরুদ্ধে দেরিতে হলেও দৃশ্যত সবার সম্বিত ফিরেছে। দুর্নীতিবাজ যেই হোক জিরো টলারেন্সের কথা সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছিল শুরু থেকেই। কিন্তু দুর্নীতি যারা রুখবেন তাদের নিয়েই ছিল সমস্যা। ভূত তাড়াতে যে শর্ষের দরকার সেই শর্ষেতেই ছিল ভূত। বেনজীর-আসাদুজ্জামানের মতো আইন প্রয়োগকারী শীর্ষ কর্তারা অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার বদলে নিজেদের পকেটই শুধুই ভরেছে। শত শত কিংবা হাজার কোটি টাকারও মালিক বনেছে বিবেকবর্জিত শ্বাপদরা। মতিউরদের জনগণের ট্যাক্সের টাকায় বেতন ভাতা দেওয়া হতো ট্যাক্স ফাঁকি রোধের জন্য। দেশ ও জাতির প্রতি বিশ্বাসঘাতকতার পরকাষ্ঠা দেখিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদের মালিক বনেছে চৌর্যবৃত্তির কুশীলবরা। ব্যাংক ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ এবং দুর্নীতির মাধ্যমে যারা আকাশছোঁয়া অর্থের মালিক হয়েছে তাদের অবৈধভাবে অর্জিত অর্থের বড় অংশ পাচার হয়েছে বিদেশে। দেশের অর্থনীতিতে যে ডলার সংকট দেখা দিয়েছে তার পিছনে দুর্নীতির বরপুত্ররা দায়ী। দেশের ও নিজেদের সুনামের স্বার্থে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর বার্তা দেওয়া হয়েছে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে। বলা হয়েছে, শুধু আমলা নয় মন্ত্রী-এমপিদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরকারের দুর্নীতিবিরোধী লড়াইয়ে কিছুটা হলেও আতঙ্কে ভুগছে চোর মহাচোররা। তবে চুন খেয়ে মুখ পুড়লে যেমন মানুষ দই দেখলেও ভয় পায় তেমন জনমনে সংশয়ও কম নয়। দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়তে হলে সর্বাগ্রে রাজনীতিতে দুবর্ৃৃত্তায়নের যে ঘুণ ধরেছে তার বিরুদ্ধে সক্রিয় হতে হবে। জনপ্রতিনিধিদের কারও কারোর সম্পদ কীভাবে মেয়াদ শেষে শত গুণ বাড়ে সে রহস্য উন্মোচন সময়ের দাবি। অফিস পিয়ন থেকে আমলা পর্যন্ত সবার সম্পদের হিসাব প্রতি বছর জমা নিতে হবে। সম্পদের দাম এক দুই কিংবা পাঁচ শতাংশ দেখানোর যে তামাশা রয়েছে তার ইতি ঘটাতে হবে। রাজনীতিক এবং সরকারি কর্মচারীদের নিজেদের পাশাপাশি স্ত্রী পুত্র কন্যা স্বজনদের সম্পদের হিসাব যাতে সরকার পেতে পারে তেমন ব্যবস্থা থাকা জরুরি। দুর্নীতি ক্ষতিগ্রস্ত করছে জাতির ভবিষ্যৎকে। এ সংকট থেকে বাঁচতে শক্ত লড়াইয়ের বিকল্প নেই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর