বৃহস্পতিবার, ৪ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

সম্পদের হিসাব

কর্মচারীদের লুটপাট বন্ধ হোক

সরকারি কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সম্পদ বিবরণীর দাখিল সংক্রান্ত বিধি কঠোরভাবে অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছেন হাই কোর্ট। জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে মঙ্গলবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের হাই কোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। এ আদেশের ফলে সম্পদের হিসাব বিবরণী দাখিলে বাধ্যবাধকতা তৈরি হয়েছে। তিন মাসের মধ্যে এ বিষয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে আদেশে। আদালত পরবর্তী আদেশের জন্য ২২ অক্টোবর দিন রেখেছেন। শুনানিতে আদালত বলেছেন, দুর্নীতি ও অর্থ পাচার সুশাসন ও উন্নয়নের অন্তরায়। তাই যে কোনো মূল্যে দুর্নীতি-অর্থ পাচার বন্ধ করতে হবে। রুলে সরকারি কর্মচারী ও তাদের পরিবারের অবৈধ সম্পদ অর্জন রোধে প্রয়োজনীয় নীতিমালা, আইন ও নীতি প্রণয়নে বিবাদীদের ভয়াবহ ব্যর্থতা এবং কথিত নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। একই সঙ্গে সরকারি কর্মচারীদের সম্পদ বিবরণী প্রকাশ ও ডিজিটাল মাধ্যমে আপডেট করার কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়েছেন আদালত। দুর্নীতি নামের ভয়াল দৈত্য যখন জাতির সব অর্জনকে গিলে খাওয়ার চেষ্টা করছে তখন আদালতের নির্দেশ এক আশাজাগানিয়া ঘটনা। এর ফলে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের ‘এলোমেলো করে দে মা লুটেপুটে খাই’ প্রবণতায় শৃঙ্খল পরানোর সুযোগ সৃষ্টি হবে। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা দেশের মালিক মোক্তার জনগণের ট্যাক্সের টাকায় বেতনভাতা ভোগ করেন। পিয়ন থেকে সচিব পর্যন্ত শতকরা অন্তত ৮০ শতাংশের কাছ থেকে উৎকোচ ছাড়া কোনো সেবা যে দেশবাসী পায় না এটি একটি ওপেন সিক্রেট। প্রতি বছর উৎকোচ খাতে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা যে আয় করেন তার পরিমাণ কয়েক লাখ কোটি টাকা। এ অর্থের একাংশ বিদেশে পাচার হচ্ছে। ঘুষ দুর্নীতির নোংরা জীবদের কারণে দেশে মূল্যস্ফীতি ঘটছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। আমরা আশা করব, দেশের ১৮ কোটি মানুষের স্বার্থে আদালতের নির্দেশ যথাযথভাবে পালিত হবে। কর্মচারীদের যথেচ্ছাচারের অবসান ঘটবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর