বৃহস্পতিবার, ৪ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

চাকরির নামে জিম্মি

ওদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিন

দেশে তরুণ-যুবকশ্রেণি যেভাবে বাড়ছে কর্মসংস্থান সে হারে তৈরি হচ্ছে না। ফলে চাকরি হয়ে উঠেছে সোনার হরিণ। স্বভাবতই ‘আমার সোনার হরিণ চাই’- এটাই অনেক তরুণের স্বপ্ন। উন্নত জীবনের আশায়, সেই স্বপ্ন ছোঁয়ার লক্ষ্যে তারা পাড়ি জমায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। ভাদ্য বদলের আকাক্সক্ষায় লাখ লাখ টাকা খরচ করে। এই সুযোগটা নিতেই ফাঁদ পেতে থাকে মানব পাচারের মাফিয়া চক্র। তারা নানা প্রলোভনের টোপ ফেলে ভাগ্যান্বেষীদের আকৃষ্ট করে। লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েও তাদের চরম অনিশ্চয়তার ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রায় ঠেলে দেয়। সাগরে ভাগিয়ে দেয়। মরু-জঙ্গল পাড়ি দিতে গিয়ে কেউ বাঁচে, কেউ বেঘোরে প্রাণ হারাচ্ছে। পরিবার জানতেও পারে না- তাদের বুকের ধন কোথায়, কেমন আছে। তারা আজীবন অপেক্ষায় থাকে। চোখের জলে বুক ভাসে কত মায়ের, কত গৃহবধূ-পুত্র-কন্যার। চাকরির নামে বিদেশে পাঠিয়ে নির্যাতনের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায় নৈমিত্তিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। লিবিয়া ও তিউনিশিয়ার বন্দি শিবিরে আটকে রয়েছে কয়েক শ বাংলাদেশি। বিদেশে নিয়ে বন্দি করে চরম নির্যাতনের ভিডিও দেখানো হচ্ছে ভুক্তভোগীদের পরিবারকে। দাবি করা হচ্ছে আরও অর্থ। ভিটেমাটি বিক্রি করে তারা টাকা পাঠাচ্ছেন। কিন্তু তাতেও না বন্ধ হচ্ছে নির্যাতন, না তারা দেশে ফিরতে পারছেন। অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবি চক্রের এমন কজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে হোতাদের খুঁজে বের করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক। তবে চাকরিপ্রত্যাশীদেরও সচেতন হতে হবে। সরকারের জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো অভিবাসন ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানে নিয়োগ প্রক্রিয়া তত্ত্বাবধান করে। বিদেশে কাজের জন্য এর সহযোগিতা নেওয়াই সর্বোত্তম। বুঝতে হবে অবৈধ প্রক্রিয়া সব সময়ই ঝুঁকিপূর্ণ, বিপজ্জনক। পাশাপাশি এ ধরনের ঘটনা রোধ ও ভুক্তভোগীদের সহায়তায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর তৎপরতা বাড়াতে হবে। বিদেশে চাকরির নামে প্রতারণা, অপহরণ, জিম্মি করে নির্যাতন বন্ধে কঠোর রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপ জরুরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর