শুক্রবার, ৫ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

প্রসূতি মৃত্যু

দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

একজন নারী যখন গর্ভধারণ করে তখন তাকে ঘিরে বর্ণিল স্বপ্ন ডানা মেলে তার পরিবারে, এমনকি সুহৃদ বন্ধুমহলেও। সবাই ঐকান্তিকভাবে কামনা করেন, হবু মা-টি যেন সুস্থভাবে ফুটফুটে শিশুর জন্ম দিয়ে সবার মুখে হাসি ফোটান। কিন্তু বাস্তবতা সব সময় মানুষের প্রত্যাশার অনুকূলে চলে না। ছন্দপতন ও স্বপ্নভঙ্গ হয়। অনভিপ্রেত প্রসূতি মৃত্যু হাহাকার ডেকে আনে অসংখ্য পরিবারে! অনেক নারী সন্তান প্রসবের সময় মৃত্যুর মুখে পতিত হয়ে বেদনার স্রোতে ভাসিয়ে যান স্বজনদের; যা তাদের আজীবন কাঁদায়। মায়ের বুকের উষ্ণতাবঞ্চিত এসব শিশু কীভাবে বেড়ে ওঠে, তা শুধু ভুক্তভোগী পরিবারই জানে। উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে- একবিংশ শতাব্দীর প্রায় সিকিভাগ অতিক্রম হতে চললেও দেশে আজও মাতৃমৃত্যুর অনেক ঘটনা ঘটছে। চিকিৎসায় অবহেলার কারণে অতিসম্প্রতি রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশ কজন প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। অস্ত্রোপচারে শিশুর জন্মের পর মারা গেছেন কয়েকজন মা। জটিলতার ঝুঁকি থাকে এমন সন্তান প্রসবের ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচার প্রয়োজন হয়। সন্তান জন্মদানে অস্ত্রোপচার জীবনদায়ী একটা ব্যবস্থা। সেখানে মৃত্যুর ঘটনা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। এ মহামর্মান্তিক মৃত্যু থামাতেই হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এজন্য অবশ্যকরণীয় বিষয়গুলো হচ্ছে- গর্ভকালীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা, গর্ভাবস্থায় ও প্রসবকালীন তত্ত্বাবধান জোরদার ও রুটিন পরীক্ষার সংখ্যা বৃদ্ধি করা। এ ছাড়াও অস্ত্রোপচারের আগে-পরে অ্যানেসথেসিয়া সেবা নিশ্চিত করা ও দক্ষ নার্স থাকা জরুরি। সংশ্লিষ্ট সবার সর্বোচ্চ সচেতনতা ও সুষ্ঠু স্বাস্থ্য-ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে অনাকাক্সিক্ষত প্রসূতি মৃত্যু রোধ করতে হবে। নামাতে হবে শূন্যের কোঠায়। সরকারি-বেসরকারি সব হাসপাতাল ও ক্লিনিকে নিয়মিত তদারকি চালু রাখতে হবে। প্রশাসনিক দৃঢ়তায় জানিয়ে দিতে হবে চিকিৎসায় অবহেলা বা অব্যবস্থাপনায় যে কোনো মৃত্যুর দায় বর্তাবে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ওপর। প্রসূতি মৃত্যু রোধে দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর