শনিবার, ৬ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

ভোটদানে অনীহা

সৎ প্রার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করুন

এক সময় জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হতেন সমাজসেবকরা, সাধারণ মানুষের সঙ্গে সার্বক্ষণিক সম্পর্ক রাখেন এমন রাজনৈতিক কর্মী বা নেতারা। নির্বাচনে টাকাওয়ালাদের দাপট সেই পাকিস্তান আমলেও ছিল, স্বাধীন বাংলাদেশেও সে দাপটের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যেত। কিন্তু স্থানীয় নির্বাচনে ভোটের বাক্সে টাকাওয়ালাদের দাপট খুব একটা অনুভূত হয়নি। টাকাওয়ালাদের ভোটাররা ভোট দিতেন তাদের পাশে পাওয়া যায় এমন প্রার্থীদের। জাতীয় নির্বাচনেও এমন প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। স্বাধীনতার আগে ও পরে দেশে সাক্ষর জ্ঞানসম্পন্ন মানুষের সংখ্যা ছিল হাতেগোনা। সম্ভবত এখন কথিত উচ্চ শিক্ষিতের হারও খুব একটা কম নয়। কিন্তু সত্যিকারের নিবেদিতপ্রাণ সমাজসেবী এখন স্থানীয় কিংবা জাতীয় কোনো নির্বাচনে দাঁড়ান না বললেই চলে। সৎ ও নিষ্ঠাবান রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের জন্য কার্যত ভোট প্রক্রিয়া নিষিদ্ধ হতে চলেছে। চলমান উপজেলা নির্বাচনেও সে চিত্র স্পষ্ট। সদ্যসমাপ্ত ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিজয়ী ৪৭০ চেয়ারম্যানের মধ্যে ২২৭ জনের রয়েছে কোটি টাকার বেশি সম্পদ। শতকরা হিসাবে যা ৪৮.৩০ শতাংশ। আরও ৭২ জন ৫০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকার সম্পদের মালিক। এ ছাড়া বিজয়ী চেয়ারম্যানদের মধ্যে শীর্ষ ১০ সম্পদশালীর তালিকায় যারা রয়েছেন তাদের সম্পদের পরিমাণ ২৮ কোটি থেকে ১৮৬ কোটি টাকার মধ্যে। বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানিয়েছে সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ছিল একতরফা। ভোটের হারও ছিল কম। নির্বাচনে ভোটদানে অনীহা ও রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচন বর্জন একই সূত্রে গাঁথা। যা নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচন ব্যবস্থার প্রতি অনাস্থারই প্রতিফলন। সুজনের বিশ্লেষণে উপজেলা নির্বাচনের যে চিত্র প্রকাশ পেয়েছে তা উদ্বেগজনক। ভোটারদের নির্বাচনে উৎসাহিত করতে শুধু নির্বাচন ব্যবস্থা নয়, রাজনীতির খোলসও পাল্টাতে হবে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সৎ নেতা-কর্মীদের বদলে প্রার্থী করা হচ্ছে কালো টাকার মালিকদের। মানুষকে ভোটমুখী করতে হলে এই প্রশ্নবিদ্ধ প্রবণতার অবসান ঘটাতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর