সোমবার, ৮ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

বঙ্গবন্ধুর মেয়ে দেশ বিক্রি করে না

মেজর জেনারেল এ কে মোহাম্মাদ আলী শিকদার পিএসসি (অব.)

বঙ্গবন্ধুর মেয়ে দেশ বিক্রি করে না

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্প্রতি ভারত সফর নিয়ে বাংলাদেশে একশ্রেণির মানুষের গাত্রদাহ দেখে পাকিস্তানি আমল, একাত্তর ও পঁচাত্তর-পরবর্তী সময়ের কথা মনে এসেছে। পাকিস্তানের সঙ্গে আমরা ২৩ বছর ছিলাম। সে সময়ে বাঙালি যখনই নিজেদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা, পূর্ব-পশ্চিমের আকাশসম বৈষম্য দূরীকরণসহ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সমতার দাবি তুলেছে তখনই পাকিস্তানি শাসকবর্গ জনমানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছে এই বলে যে, ওইসব দাবি-দাওয়া যারা করছে তারা ভারতের দালাল হয়ে দেশ বিক্রি করে দিতে চাইছে। পাকিস্তানিদের সঙ্গে গলা মিলিয়েছে এ দেশেরই রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনের একাংশ মানুষ। বাঙালির এই অংশ পশ্চিম পাকিস্তানিদের চেয়ে অনেক বেশি চিৎকার ও অপপ্রচার করেছে। সত্তর-একাত্তরে এসে বাঙালির বিভক্তিটা একেবারে স্পষ্ট হয়ে যায়। স্বাধীনতা অর্জনের সবচেয়ে বড় অনুঘটক ছয় দফার প্রতি সত্তরের নির্বাচনে বাঙালি জাতির ম্যান্ডেট যখন বঙ্গবন্ধু চাইলেন, তখন বাঙালির ভিতর থেকে ২০-২৫ ভাগ তাঁর বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে। এই ২০-২৫ ভাগ মানুষ পরিষ্কার জানিয়ে দিল তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা চায় না। বাঙালির এই অংশই পাকিস্তানের গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের একান্ত অনুগত সঙ্গী হয়েছে এবং মুক্তিযোদ্ধাদের লক্ষ্য করে বলেছে, এরা ভারতের লেলিয়ে দেওয়া সন্ত্রাসী।

আজকে যারা ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের অগ্রায়ন দেখে দেশ বিক্রির চিৎকার করছে তাদের ঠিকুজি নিলে দেখা যাবে পাকিস্তান আমলে ও একাত্তরে এদের পিতা-মাতা দাদা-নানারা বাঙালির স্বার্থকে বিলিয়ে দিয়ে পাকিস্তানিদের সহযোগী হয়েছে। ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও তারা এবং তাদের উত্তরসূরিদের চিন্তা ও স্বভাবের কোনো পরিবর্তন হয়নি। জাতির পিতাকে অমান্য করা ও স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রকে ছুড়ে ফেলার মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয় এরা এখনো বাংলাদেশের স্বাধীনতা মেনে নিতে পারেনি এবং সে কারণেই পাকিস্তানি আমল ও একাত্তরের মতো ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ককে মেনে নিতে পারছে না, তার ওপর কালিমা লেপনের চেষ্টা করছে। এই গোষ্ঠীর রাজনৈতিক পক্ষ পঁচাত্তরের পর মোট ৩১ বছর ক্ষমতায় থেকেছে। তারা বাংলাদেশের ভূমি অলিখিত অঘোষিতভাবে পাকিস্তানের কাছে লিজ দিয়েছে। সে জায়গা ব্যবহার করে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে আন্তসীমান্ত সন্ত্রাসের মাধ্যমে প্রক্সি যুদ্ধ চালিয়েছে, যা ২০০৪ সালে চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক অস্ত্রের চালান ধরা পড়ার পর জনসম্মুখে আসে।

বাংলাদেশের কোনো জায়গা প্রকাশ্যে বা অপ্রকাশ্যে অন্য কোনো দেশের কাছে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর মেয়ে শেখ হাসিনা লিজ দেননি, বরং আলোচনা ও সোহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে ভারতের কাছ থেকে প্রায় ২০ হাজার বর্গকিলোমিটার সমুদ্র এলাকা এবং ছিটমহল বিনিময়ের মাধ্যমে প্রায় ১৭ হাজার একর জমির ওপর বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করেছেন। জাতীয় স্বার্থ বিক্রি আর নতজানু পররাষ্ট্রনীতির সন্ধানে একটু পেছনের দিকে তাকালেই পাওয়া যাবে ইউনিকল তেল-গ্যাস কোম্পানির মাধ্যমে কারা বাংলাদেশের স্বল্প মজুত গ্যাস পাইপলাইনে ভারতে রপ্তানি করতে চেয়েছে আর কারা সেটা বাধা দিয়েছে এবং কোন আমলের কোন প্রধানমন্ত্রী দিল্লি সফর শেষে ঢাকার বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন, ‘গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তির কথা তো আমি ভুলেই গিয়েছিলাম।’ এবার ভারত-বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধুর যে প্রমাণ তার কয়েকটি উদাহরণ তুলে ধরি।

এক. একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের কয়েক হাজার সৈন্য বিনা শর্তে বাংলাদেশের মাটিতে প্রাণ দিয়েছে, যার উদাহরণ বিশ্বে বিরল। দুই. যুদ্ধে জয়ের মাত্র সাড়ে তিন মাসের মাথায় বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে বাংলাদেশ থেকে সব সৈন্য ভারত প্রত্যাহার করে নেয়। কোনো অসৎ উদ্দেশ্য থাকলে তখন অনেক যুৎসই অজুহাত ছিল, যা ব্যবহার করে ভারত বাংলাদেশে সেনা অবস্থান বজায় রাখতে পারত। তিন. বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন এবং জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সর্বত্যাগী আপসহীন মনোভাব তখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীসহ অন্যান্য রাজনৈতিক ও আমলা মহলের কাছে ভালো করেই জানা ছিল। ভারতের যদি ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য থাকত তাহলে পাকিস্তানি কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধুর মুক্তির ব্যাপারে ভারত এবং ইন্দিরা গান্ধী নিজে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জোরালো কূটনৈতিক তৎপরতা চালাতেন না, যেটি তারা করেছে। চার. একাত্তরের যুদ্ধে পশ্চিম ফ্রন্টে পাকিস্তানের প্রায় ৫১৩৯ বর্গমাইল এলাকা ভারত দখল করে নেয়। যুদ্ধ শেষে প্রায় ৯৩ হাজার পাকিস্তানি সেনা ভারতের কবজায়। ভারত ইচ্ছা করলে এত বড় দুই ট্রাম্পকার্ড ব্যবহার করে কাশ্মীরের বিষয়ে বড় ধরনের সুবিধা আদায় করে নিতে পারত। কিন্তু এই দুটি ট্রাম্পকার্ডই ইন্দিরা গান্ধী ব্যবহার করেছেন বঙ্গবন্ধুর মুক্তি এবং প্রায় ২৩ হাজার বাঙালি সৈন্যসহ লক্ষাধিক বাঙালিকে ফেরত আনার কাজে।

বঙ্গবন্ধু ও ইন্দিরা গান্ধীর অনেক বড় লক্ষ্য ছিল। ভারত ও বাংলাদেশ যদি নীতি এবং আদর্শের ঐক্যের ওপর ভিত্তি করে নিরাপত্তা, উন্নয়ন ও অগ্রগতির যাত্রা একটানা কয়েকটি বছর অব্যাহত রাখতে পারে তাহলে তার প্রভাবে পাকিস্তানসহ পুরো দক্ষিণ এশিয়ার আন্তরাষ্ট্রীয় সম্পর্কের বিরাট পরিবর্তন ঘটে যাবে এমন লক্ষ্য নিয়েই দুই রাষ্ট্রনায়ক এগোচ্ছিলেন। অন্যতম একটি লক্ষ্য ছিল সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার দেশ নিয়ে একটি অর্থনৈতিক সহযোগিতার জোট গঠন করা। সেটা সফল হলে পাকিস্তানও তখন মিলিটারি ও মোল্লাদের কবল থেকে মুক্ত হয়ে দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক জোটে যুক্ত হয়ে যেত। তাতে পুরো দক্ষিণ এশিয়ায় স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা হতো তা শুধু নয়, পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী অর্থনৈতিক জোট হতো দক্ষিণ এশিয়া। বঙ্গবন্ধু ও ইন্দিরা গান্ধীর মতো দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতা ক্ষুদ্র ও  সংকীর্ণ নয়, এ অঞ্চলের বৃহত্তর শান্তি ও সমৃদ্ধির কথা চিন্তা করেছেন। নিকট প্রতিবেশী রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে অশান্তি থাকলে এবং প্রতিবেশীদের মধ্যে সাংঘর্ষিক সম্পর্ক থাকলে কোনো দেশের পক্ষেই সমৃদ্ধির পথে এগোনো সম্ভব হয় না। এই ধ্রুব সত্য দুই মহান নেতা উপলব্ধি করেছেন। কিন্তু সব শেষ হয়ে যায় ১৯৭৫ সালে। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের পথ ধরেই ১৯৮৪ সালে নিহত হন ইন্দিরা গান্ধী। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে ইন্দিরা গান্ধী এভাবে নিহত হতেন না। যারা ক্ষুদ্র ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক চিন্তা করে তারা পূর্বে যেমন পারেনি, আগামীতেও বৃহত্তর চিন্তা করতে পারবে না।

ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক শুধু দুই রাষ্ট্রের সম্পর্ক নয়। জাতিগত, ভাষাগত, সংস্কৃতি, ইতিহাস-ঐতিহ্য, গান, নাটক, সিনেমাসহ এপার-ওপারের বাঙালি পরিবার আত্মীয়তার সম্পর্কে জড়িত। রাজনীতির বিভাজন রেখা টেনে এই সম্পর্কের মধ্যে স্থায়ী বিচ্ছেদ প্রকৃতিগতভাবেই সম্ভব নয়। সে কারণেই গত ১৫ বছরে দুই দেশের নেতৃত্বের দূরদর্শিতায় উভয় দেশের নির্ধারিত ভিশন-মিশন বাস্তবায়নে যৌথভাবে আজ যে পর্যন্ত এগিয়েছে সেটি এখন দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের মডেল হিসেবে গণ্য হচ্ছে। ভারতের সঙ্গে ২৫৬০২ বর্গকিলোমিটার অমীমাংসিত সমুদ্র এলাকার মধ্যে আন্তর্জাতিক আদালতের সালিশির মাধ্যমে বাংলাদেশ ১৯৪৬৭ বর্গকিলোমিটার পেয়েছে। এই সমুদ্র অঞ্চল আগামীতে বাংলাদেশের ব্লু ইকোনোমিতে বিশাল ভূমিকা রাখবে। কেউ বলতে পারেন এটা তো আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ের ফলে হয়েছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক আদালত রায় দেওয়ার পরও ফিলিপাইন চীনের কাছ থেকে সমুদ্র এলাকার দখল পায়নি। ছিটমহল বিনিময়ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ভারতের চেয়ে প্রায় ১০ হাজার একর বেশি জায়গার মালিকানা পেয়েছে। স্থলসীমানা পরিপূর্ণভাবে চিহ্নিতকরণ সম্পন্ন হয়েছে। সমুদ্র ও স্থলসীমানার বিরোধ নিয়ে যখন দেশে দেশে যুদ্ধাবস্থা চলছে, তখন ভারত-বাংলাদেশ তা শান্তিপূর্ণভাবে মিটিয়ে ফেলতে পেরেছে। দুই দেশের নিরাপত্তার জন্যই বড় হুমকি জঙ্গি সন্ত্রাস দমনে যৌথভাবে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করায় উভয় দেশই এখন অনেকটাই দুশ্চিন্তামুক্ত। বাংলাদেশের সহযোগিতায় ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে শান্তি ফিরে এসেছে। এটা ভারতের জন্য বিশাল স্বস্তির বিষয়। অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনের ইস্যুটি এখন সবচেয়ে বড় আলোচিত বিষয়। তিস্তা নদীর পানি বণ্টনের চুক্তিটি প্রতিশ্রুতির পর অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক জটিলতার জন্য ভারত করতে পারেনি। এ দায় ভারতের। এই ইস্যুটি এখন ভারতবিরোধী প্রচারণায় বড় অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। দুই দেশের প্রয়োজনের তুলনায় তিস্তাতে পানি প্রবাহের স্বল্পতা অনেক বেশি। তাই এর স্থায়ী সমাধানের জন্য এবার প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফরের সময় বিকল্প ব্যবস্থায় উভয় দেশ একমত হয়েছে। তিস্তা নদীর সুরক্ষা ও ব্যবস্থাপনায় ভারতের সহায়তায় প্রকল্প গ্রহণ করা হবে। এ প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের বিষয়ে ভারতের আন্তরিকতা ও সদিচ্ছা দৃশ্যমানভাবে মানুষের কাছে প্রতীয়মান হওয়া প্রয়োজন। এটা হয়ে গেলে আগামীতে বাংলাদেশকে আর ভারত বা অন্য দেশের ওপর নির্ভরশীল থাকতে হবে না। স্থায়ী সমাধান হয়ে যাবে।

রেল যোগাযোগব্যবস্থা নিয়ে বড় অপপ্রচার হচ্ছে। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগ হওয়ার পরও ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত যেসব লাইন চালু ছিল তা আবার পর্যায়ক্রমে চালু হয়েছে। ক্রমশই এই সংযোগ বৃদ্ধিতে উপ-আঞ্চলিক উদ্যোগও অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে, যা শিগগিরই বাংলাদেশকে নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে সংযুক্ত করবে। করিডর অথবা ট্রানজিট হচ্ছে না। কানেকটিভিটি হচ্ছে, যা আগামীতে বাংলাদেশের জন্য বিশাল সম্ভাবনার সৃষ্টি করবে। ভারতসহ নেপাল-ভুটানের পণ্য বাংলাদেশের ওপর দিয়ে যাওয়া-আসা করার জন্য বাংলাদেশ শুল্কসহ আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুসারে সব ধরনের মাসুল পাবে, যা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পথকে প্রসারিত করবে। ইতোমধ্যে ঘোষিত হয়েছে এর মাধ্যমে অস্ত্র-গোলাবারুদ ও বিস্ফোরক দ্রব্য পরিবহন করা যাবে না। যে কানেকটিভিটি এখন ভারত-বাংলাদেশ শুরু করছে, সেটি আগামীতে নেপাল ও ভুটান শুধু নয়, তা পূর্বে মিয়ানমার, চীন, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া হয়ে ভিয়েতনাম পর্যন্ত যাবে। এই কানেকটিভিটির ভরকেন্দ্র হবে বাংলাদেশ। তার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের জন্য বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের সুযোগ সৃষ্টি হবে তা শুধু নয়, বিপুল সংখ্যায় কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। যারা এটা নিয়ে চিৎকার করছে, যাদের জন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দুটি কবিতার লাইন আছে- ‘দ্বার বন্ধ করে দিয়ে ভ্রমটারে রুখি/ সত্য বলে, আমি তবে কোথা দিয়ে ঢুকি।’ সুতরাং দরজা বন্ধ কোনো কিছুর সমাধান নয়।

রাষ্ট্র ও রাজনীতির বিষয়ে একটা দেশের জন্য ১৫-২০ বছর তেমন কিছু দীর্ঘ সময় নয়। যাত্রা শুরু এবং তা বহমান রাখতে পারলে একসময়ে গন্তব্যে পৌঁছানো যায়। স্বাধীনতার জন্য ১৯৪৮ সালে যে যাত্রা শুরু হয় তা বঙ্গবন্ধু বহমান রাখতে পেরেছিলেন বলেই একাত্তরে এসে আমরা চূড়ান্ত সফলতা লাভ করি। স্বাধীনতার পর আমাদের নতুন যাত্রা শুরু হয়। পথিমধ্যে নিকষ কালো অন্ধকারের মধ্যে পড়লেও ৫৩ বছরের মাথায় এসে বাংলাদেশ আবার মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। আজকে যারা চিৎকার করছে, তাদের রাজনৈতিক পক্ষ পঁচাত্তরের পর মোট ৩১ বছর ক্ষমতায় ছিল। কিন্তু ভারতের কাছ থেকে কিছুই আদায় করতে পারেনি। বঙ্গবন্ধুর মেয়ে গঙ্গার পানি চুক্তি, প্রায় ২০ হাজার বর্গকিলোমিটার সমুদ্র এলাকা আদায়সহ যুগান্তকারী ছিটমহল বিনিময় ও স্থলসীমান্তের স্থায়ী সমাধান করেছেন। সুতরাং দিল্লি সফর শেষে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী যথার্থই বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর মেয়ে দেশ বিক্রি করে না।

লেখক : রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক

[email protected]

সর্বশেষ খবর