শিরোনাম
সোমবার, ৮ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

দুর্নীতির বিচার

দ্রুত সম্পন্ন করার পদক্ষেপ নিন

বিলম্বিত বিচার বিচারহীনতার নামান্তর। এটা বিচারাঙ্গনে সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত প্রবচন। বিচারে দীর্ঘসূত্রতা ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় বড় অন্তরায়। অথচ এমন স্থবিরতা দেখা দিয়েছে দেশের দুর্নীতি সংশ্লিষ্ট বিচার প্রক্রিয়ায়। তার সুযোগ নিচ্ছেন চিহ্নিত ও অভিযুক্ত দুর্নীতিবাজরা। সরকারের দুর্নীতিবিরোধী অবস্থানে বিভিন্ন পেশার দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যে হারে অভিযোগ উঠছে ও মামলা হচ্ছে, সেভাবে বিচার প্রক্রিয়া এগোচ্ছে না। বর্তমানে ৪ হাজারের বেশি দুর্নীতির মামলা উচ্চ আদালতে ঝুলে আছে। সারা দেশে বিচারাধীন প্রায় ৩ হাজার। প্রধানত এসব মামলার আসামি রাজনীতিক, ব্যবসায়ী, সাবেক ও বর্তমান পদস্থ সরকারি কর্মকর্তা। তাদের বিরুদ্ধে ঘুষ-দুর্নীতি, আয়ের সঙ্গে সংগতিহীন সম্পদ অর্জন, সম্পদের তথ্য গোপন, অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। এর মধ্যে অনেক মামলা বিশেষভাবে আলোচিত এবং এগুলোর নিষ্পত্তি মন্থর। দুর্নীতির রাঘববোয়ালরা আবেদন-নিবেদনের কূটকৌশলে সময়ক্ষেপণ করছে বিচার প্রক্রিয়ায়। তৈরি হচ্ছে মামলাজট। ন্যায়বিচার নিয়ে সংশয় তৈরি হচ্ছে জনমনে। সরকারের তিন স্তম্ভের অন্যতম বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে, যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। দুর্নীতি মামলার বিচারে পর্যাপ্ত পৃথক বা বিশেষায়িত বেঞ্চ ও বিচারক না থাকা এবং দুদকের নিজস্ব আইনজীবীর স্বল্পতা অনেকাংশেই এর জন্য দায়ী। এ অবস্থা উত্তরণে, সমাজে দুর্নীতির চলতি মহোৎসব থামাতে দরকার সত্যিকার রাজনৈতিক সদিচ্ছা। বিচার বিভাগকে শক্তিশালী ও গতিশীল করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। এক্ষেত্রে অবকাঠামো উন্নয়ন সর্বাগ্রে জরুরি। বিশেষায়িত বেঞ্চ প্রতিষ্ঠা ও বিচারক নিয়োগের পাশাপাশি দুদকে অধিক সংখ্যক নিজস্ব আইনজীবী নিয়োগ করতে হবে। আলোচিত দুর্নীতিবাজদের মামলাগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিষ্পত্তি করে দন্ডের রায় জনসম্মুখে প্রকাশ ও কার্যকর করতে হবে। অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, দুর্নীতি দমন এবং বিচার বিভাগের মর্যাদা সমুন্নত রাখতে এসব এখন সময়ের দাবি।

সর্বশেষ খবর