বৃহস্পতিবার, ১১ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

কিডনি বেচাকেনা

অপরাধীদের আইনের আওতায় আনুন

ভারতে দিল্লির নামকরা এক হাসপাতালে বাংলাদেশি রোগীদের কিডনি বেচাকেনার দায়ে সাতজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে একজন চিকিৎসক, তিনজন বাংলাদেশি। বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশেই মানবদেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বেচাকেনা নিষিদ্ধ। দেশে কিডনি রোগীর সংখ্যা অনেক, দিনদিন তা বাড়ছেও। কিডনির কাজ রক্তের বর্জ্য বের করে পানি ও লবণের ভারসাম্য রক্ষা। সেই কাজে প্রত্যঙ্গটি অকেজো হয়ে পড়লে কৃত্রিমভাবে চালু রাখতে নিয়মিত ডায়ালাইসিসের প্রয়োজন হয়। এটা ব্যয়বহুল; এর খরচ বহন করা যে কারও জন্যই কঠিন। সেখানে প্রতিস্থাপন স্থায়ী সমাধান। তবে শুধু নিকটাত্মীয় কেউ যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কিডনি দান করতে পারেন। এ সুযোগটাই নেয় দুর্বৃত্তরা। যেহেতু একটি কিডনি নিয়েও মানুষ বাঁচতে পারে, তারা গরিব মানুষদের এটা বুঝিয়ে অনেক টাকার লোভ দেখিয়ে কিডনি বিক্রিতে সম্মত করে। তারপর নিকটাত্মীয়ের ভুয়া পরিচয়ে অন্যকে চড়া দামে তা দেওয়া হয়। দেশে অনেক কিডনি ব্যবসায়ী চক্র গড়ে উঠেছে। তাদের কাছে প্রতারিত হয়েছে দাতা-গ্রহীতা উভয় শ্রেণিই। নামমাত্র দামে কেনার চুক্তি করেও তারা দাতাকে বঞ্চিত করেছে, আবার দশ গুণ বেশি দাম নিয়েও গ্রহীতাকে ফেলেছে বিপদে। তাদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে মানহীন ম্যাচিং ও নিম্নমান থিয়েটারে অপারেশন করিয়ে। অল্প সময়ের মধ্যে দাতা ও গ্রহীতা মারা গেছেন- এমন ঘটনা অনেক। এ দুর্বৃত্ত চক্র জাল ছড়িয়েছে দেশের সীমানা অতিক্রম করে প্রতিবেশী ভারতেও। দরিদ্র রোগীদের টাকার লোভ দেখিয়ে সে দেশের বিভিন্ন শহরে নিয়ে অপারেশনের মাধ্যমে তাদের কিডনি অপসারণ করা হয়েছে। সেই কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে অন্যের শরীরে। ৫ লাখ টাকায় কিনে বেচা হয়েছে ৫০ লাখে। আন্তর্জাতিক সংঘবদ্ধ চক্র এ অপকর্ম চালিয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। অবশেষে গ্রেফতার। এরা সে দেশের আইনি শর্ত পূরণের নথিপত্র তৈরিতেও জালিয়াতি করেছে। কঠোরভাবে এ অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কিডনি বেচাকেনা চক্রের সদস্যদের আনতে হবে আইনের আওতায়।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর