শনিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

প্রশ্নফাঁসে হর্তাকর্তারাও

ঢেলে সাজাতে হবে পিএসসি

কোথায় যাবে দেশের উচ্চশিক্ষিত মেধাবী তরুণরা? প্রশ্নটি এজন্যই উঠছে, কারণ বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় লজ্জাজনক অবস্থায় পড়েছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। কেঁচো নয়, বড় বড় সাপ বেরোচ্ছে প্রতিদিন। সংঘবদ্ধ দুবর্ৃৃত্ত চক্র বিসিএস ক্যাডার, নন-ক্যাডারসহ বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে আসছিল দীর্ঘদিন ধরে। সম্প্রতি রেলের এক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় গ্রেপ্তার হন ১৭ জন। তাদের মাধ্যমে বেরিয়ে আসছে অপকর্মের খতিয়ান। দুশ্চিন্তার বিষয় হচ্ছে, জঘন্য অপরাধের এ চক্রে জড়িত অনেক হর্তাকর্তাও। শীর্ষস্থানীয় থেকে অফিস সহকারী, গাড়ির চালক পর্যন্ত। কে যে নয় তা বলা মুশকিল। কাউকেই সন্দেহের বাইরে রাখা যাচ্ছে না। এটা দুর্ভাগ্যজনক। তারা একেকজন আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন। আলোচিত গাড়িচালক হয়েছেন শত কোটি টাকার মালিক। অফিস সহকারী এবং প্রহরীও কোটিপতি। এদের মাধ্যমে তুলনামূলক অযোগ্য অসৎ প্রার্থীরা চড়া দামে চাকরি কিনেছেন। অন্যদিকে প্রকৃত যোগ্যরা বঞ্চিত হয়েছেন, যাদের ক্ষতি অপূরণীয়।

এখন ফাঁস হওয়া প্রশ্নে চাকরি পাওয়াদের নাম বলছেন গ্রেপ্তাররা। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে- প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়া সব পরীক্ষা ও নিয়োগ কি বাতিল হবে? সেটাই উচিত; যদিও প্রক্রিয়াটি জটিল। দেশের লাখ লাখ শিক্ষিত যুবক উপযুক্ত চাকরি না পেয়ে হতাশ। মেধাবী উচ্চশিক্ষিতরা অনেক শ্রমসাধনায় নিজেদের তৈরি করেন মর্যাদাসম্পন্ন সরকারি চাকরির জন্য। তারা তাকিয়ে থাকেন পিএসসির দিকে। অনেক আস্থা ও ভরসার জায়গা এটা। সেখানেও যদি পচন ধরে, তৈরি তরুণরা কোথায় যাবেন? অন্যদিকে জীবনের শুরুতেই যারা দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে চাকরি হাতিয়েছেন, কর্মক্ষেত্রে তারা দেশের ললাটে কতটা কলুষতার কালিমা লেপন করবেন, তা সহজেই অনুমেয়। এরা দেশের চালিকাশক্তির ১ শতাংশ হলেও তা হবে কলঙ্কজনক। নিয়োগ ক্ষেত্রে নৈতিকতার মর্মান্তিক পতন, আর তাতে প্রকৃত যোগ্যদের বঞ্চনা মেনে নেওয়া যায় না। এখানে অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং অতীতের বিচ্যুতি সংশোধনই যথেষ্ট নয়, সূক্ষ্ম ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে বের করতে হবে সব অসৎ কর্মচারীকে। পিএসসির কর্মকাঠামো এবং গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়াই ঢেলে সাজানো প্রয়োজন।

সর্বশেষ খবর