সোমবার, ১৫ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

নিত্যপণ্যের বাজার

লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি সামাল দিন

ভারি বৃষ্টি ও উজান থেকে আসা ঢলে বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে দেশের বিস্তীর্ণ এলাকা। মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে উঠেছে চাল ডাল চিনি মাছ মাংস ডিম ও সবজির দাম আকাশচুম্বী হয়ে ওঠার বিড়ম্বনা। কাঁচা মরিচের দাম প্রতি কেজি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, পিঁয়াজের দাম ১২০ টাকা কেজিতে পৌঁছেছে বেশ আগে। আলুর দাম বছরজুড়েই লাগামছাড়া। পিঁয়াজ ও আলুর দাম মানুষের নাগালে আনতে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যে কোনো দেশ থেকে এ দুটি পণ্য আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে। কাঁচা মরিচও আমদানি হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। কিন্তু ভারতের আসামসহ বিস্তীর্ণ এলাকা বন্যাকবলিত হওয়ায় সেখানেও কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে অবিশ্বাস্যভাবে। জলবায়ু পরিবর্তনের অশুভ প্রভাবে চলতি বছর পিঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে সত্যিকার অর্থে কম। আলু উৎপাদনও ছিল নিরুৎসাহজনক। কাঁচা মরিচের উৎপাদন মার খেয়েছে এপ্রিল মে জুনে প্রচণ্ড খরায় মরিচ গাছ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায়। এ মুহূর্তে দেশের ১৮টি জেলা বন্যাকবলিত হয়ে পড়ায় বাজারে সবজির সরবরাহ কমেছে। ফলে দাম বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। সরকারের কাছে বড় মাপে দেশের মানুষের প্রত্যাশা একটাই- নিত্যপণ্যের দাম ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকা। গত দুই বছরে টাকার দাম ডলারের বিপরীতে ৪০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। দেশের বেশির ভাগ মানুষের প্রকৃত আয় হ্রাস পেয়েছে টাকার দর পতনে। খাদ্যপণ্যের দাম আকাশচুম্বী হয়ে ওঠায় নিম্নবিত্তের মানুষ টিকে থাকার লড়াইয়ে দিশাহারা হয়ে পড়ছে সংসার চালাতে। এর ফলে মানুষের ক্ষোভের তীর সরকারের দিকেই ধাবিত হচ্ছে। বাজার অর্থনীতির এই যুগে সরকার ইচ্ছা করলেই পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে এমন অনুযোগ অনুদারতার শামিল। তবে যেসব কারণে পণ্যমূল্য অস্বাভাবিকভাবে বাড়ে সেগুলো নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।  যেমন চাঁদাবাজি বন্ধ হলে দ্রব্যমূল্য কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে আসবে। কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির অপচেষ্টা দমন করতে হবে কঠোরভাবে। খাদ্যপণ্য উৎপাদনে কৃষকদের ভর্তুকি বাড়াতে হবে। পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য থামাতে হবে জরুরিভাবে।

সর্বশেষ খবর