শিরোনাম
মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

ট্রাম্পের ওপর হামলা পৃথিবীর জন্য অশনিসংকেত

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম

ট্রাম্পের ওপর হামলা পৃথিবীর জন্য অশনিসংকেত

আগামীকাল মুসলিম জাহানের সবচেয়ে বেদনাবিধুর শোকের দিন ১০ই মহররম। ফোরাতের তীরে কারবালায় এজিদ-সীমারের হাতে প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র ইমাম হোসেনের নিদারুণ হত্যা। বর্শার ডগায় ইমাম হোসেনের মস্তক সীমার নিয়ে গিয়েছিল দামেস্কে অনেক উপঢৌকন পুরস্কার পাবে বলে। কিন্তু তাদের পরিণতি ভালো হয়নি। পৃথিবীর ইতিহাসে কোনোকালে এ ধরনের কোনো অন্যায়কারী পরবর্তীতে ভালো থাকেনি, থাকতে পারেনি। একজন মুসলমান হিসেবে কারবালার বিয়োগগাথা বুকের মধ্যে এক বেদনার অনুরণ তুলে শুধু মুসলমান হিসেবে নয়, প্রকৃত প্রতিটি মানুষের কারবালা এক নিদারুণ শিক্ষা। অথচ আমরা সেই কারবালা থেকে তেমন কোনো শিক্ষাই নেই না, নিতে পারি না। সত্যিকার বলতে কি নিতে চাইও না। আল্লাহ রব্বুল আলামিন কারবালার ঘটনা থেকে কারবালার বিয়োগব্যথা থেকে আমাদের শিক্ষা দিন, ভবিষ্যতে চলার পথ দেখান এই কামনাই করি।

সারা বিশ্বের এক মহা পরাশক্তি আমেরিকা। যখন যেমন তখন তেমন করে বিশ্ব পরিমন্ডলকে অনেক সময় দূষিত করে তুলে। সব সময় বাংলাদেশের প্রশ্নে এটা ওটা করে চলেছে। বলে চলেছে এখানে নিষেধাজ্ঞা, ওখানে নিষেধাজ্ঞা, এ দিন সরকার বদল, ওইদিন অমুককে সরকারে বসানো যেগুলো সভ্য সমাজে একেবারে অচল। ক্ষমতার দম্ভে সবই করে চলেছে। বিরোধী দল মনে করছে আমেরিকা যেন তাদের, বাংলাদেশ যেন আমেরিকার তাঁবেদার, বিরোধী দলকে আমেরিকা সরকারে বসিয়ে দেবে। এসব কোনো শুভ চিন্তার খোরাক নয়। কিন্তু তবু আমাদের দেশে জনগণের আস্থাহীনদের অনেকেই বাইরের দিকে তাকিয়ে থাকে। আমরা যেমন কোনো কিছু হলেই আল্লাহর দয়া বলে সান্ত্বনা পাই, তেমনি অনেক রাজনৈতিক কাঙ্গালেরাও পরের দিকে তাকিয়ে থাকে। নভেম্বরে আমেরিকায় নির্বাচন। ফলাফল অনেকটা জানা হয়েই গেছে। বর্তমান প্রেসিডেন্ট অনেক ক্ষেত্রেই পেরে উঠছেন না। এই সেদিন এক নির্বাচনি সভায় সাবেক রাষ্ট্রপতি ট্রাম্পের ওপর গুলি চলেছে। এ এক মারাত্মক অশনিসংকেত। অমন একটা দেশে নির্বাচনি প্রচারে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর ওপর গুলি চললে বলার মতো আর কী থাকে? গুলিটি কানের পাশ দিয়ে বেরিয়ে গেছে। এটি মাথায় অথবা বুকে লাগলে আজ বিশ্বের অনেক কিছুই অন্যরকম হতো। এমন ঘটনার নিন্দা করার ভাষা খুঁজে পাওয়া যায় না। এ থেকে বোঝা যায়, আমেরিকার সমাজ কতটা ক্ষয়িষ্ণু, কতটা দুর্বল, কতটা বাধাহীন। যেখানে মানবতা স্বাধীনতা মানবিক মূল্যবোধের ওপর শক্ত আঁটুনিতে বাঁধা বিশ্ব দরবারে প্রয়োজন সেখানে এরকম অধঃপতন আমাদের কেয়ামতের আলামত মনে করিয়ে দেয়। পরম করুণাময় আল্লাহ তিনি ট্রাম্পকে হেফাজত করে বিশ্ববাসীকে এক দাবানলের হাত থেকে রক্ষা করেছেন। আমাদের দয়াময় স্রষ্টা শান্তিতে স্বস্তিতে নিরাপদে রাখুন।

নানা দিকে নানা সমস্যা নানা উথাল-পাথাল। কোনটা নিয়ে আগে আলোচনা করি সে নিয়েও এক মহা বেড়াজালে পড়েছি। বৃষ্টি-বাদল, ঝড়-তুফানে এক মারাত্মক দুর্যোগপূর্ণ অবস্থা। রংপুর-দিনাজপুর-কুড়িগ্রাম-গাইবান্ধা-লালমনিরহাট, অন্যদিকে সিলেটের সুনামগঞ্জ-হবিগঞ্জ বারবার তলিয়ে যাচ্ছে। এদিকে বগুড়া-সিরাজগঞ্জ-পাবনায় ভাঙন চলেছে। পানি একবার কমে আবার বাড়ে। মানুষের স্বপ্ন ভেঙেচুরে চুরমার। কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে সাধারণ হতদরিদ্র মানুষ। এক সময় সরকারকে ভাবা হতো, বিরোধী দল ভাবা হতো, সমাজ সেবকদের ভাবা হতো এখন কিছুই নেই। সব আখের গোছাতে ব্যস্ত। আগে কোনো ঘটনা হলেই ছুটে যেতাম। এখন তেমনটা পারি না। শরীর স্বাস্থ্য আগের মতো সাহায্য করে না। কিন্তু তাই বলে তো বিপদ-আপদ সমস্যা বসে থাকে না। গত মাসে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বোন হাসিনা দুবার ভারত গিয়ে ১০টি সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেছেন। বিরোধীরা বলছে, দেশ বিক্রি করে দিয়েছেন। সত্যিই কি ওভাবে দেশ বিক্রি করা যায়? দাখিলা পর্চা কোথায়? দলিল দস্তাবেজ কোথায়? কথা বলতে হবে তাই যদি হয় তাহলে তো সরকারের ওপর যেমন মানুষের আস্থা নেই, তেমনি বিরোধী দলের প্রতিও তো কোনো আস্থা থাকবে না। বলতে গেলে নেই-ও। ভারতের সঙ্গে ১০ সমঝোতা স্মারকে আগরতলা পর্যন্ত একটি রেললাইনের কথা আছে। এই নিয়েই যত কথা। বাংলাদেশের ওপর দিয়ে ভারতের এবং ভারতের ওপর দিয়ে বাংলাদেশের রেল চলাচল নতুন নয়। পাকিস্তান আমলে রেল চলত, ’৬৫ সালে ভারত পাকিস্তান যুদ্ধের পর সেটা বন্ধ হয়েছিল। তারপর আস্তে আস্তে কিছু কিছু জায়গায় বাংলাদেশের ওপর দিয়ে ভারতে যেমন যাতায়াত হচ্ছে, ঠিক তেমনি রেল যাতায়াতও হচ্ছে। এত দিন কথা হলো না, হঠাৎ নতুন করে কথা উঠল কেন? ঢাকা থেকে আমাদের রেল কলকাতা যায় না? কলকাতা থেকে ঢাকায় আসে না? ঢাকা থেকে নিউ জলপাইগুড়ি প্রতিদিন প্যাসেঞ্জার ট্রেন যাতায়াত করছে। শুধু বাংলাদেশ থেকে ভারতে কেন, ভারত থেকে বাংলাদেশে কেন, ভারত থেকে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে কিছু কিছু জায়গায় বহুদিন থেকে ভারতীয় ট্রেন যাতায়াত করছে। তাতে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের কোনো অঙ্গহানি হয়নি। আমাদের বুক চিড়ে আগরতলা থেকে কলকাতা, কলকাতা থেকে আগরতলা বেশ কয়েক বছর ধরে বাস যাতায়াত করছে। ’৬৫-এর ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পরও আরিচা-ফুলছড়ি-বাহাদুরাবাদ হয়ে আসামের ধুবড়ি-গোয়ালপাড়া জাহাজ যাতায়াত করত, এখনো করে। তাহলে হঠাৎ করে ১০ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরে এমনকি হলো যে, দেশ বিক্রি হয়ে গেল? অন্যদিকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বোন শেখ হাসিনা সেদিন চীন সফরে গিয়েছিলেন। কেউ বলছেন, তিনি চীন সফরে ব্যর্থ হয়েছেন। কিন্তু যা যা সরকারি প্রোগ্রাম ছিল সবকিছু হয়েছে। বরং মহান চীন বাংলাদেশকে প্রয়োজনের অতিরিক্ত গুরুত্ব দিয়েছে। কেউ বলছেন, কিছুক্ষণ আগে চীন থেকে চলে আসা তার সফরের ব্যর্থতার ইঙ্গিত বহন করে। কেন তিনি তার সমস্ত সরকারি অনুষ্ঠান শেষ করে রাত ১০টায় রওনা হয়ে দেশে ফিরেছেন? যেখানে সকাল ১০টায় ফেরার কথা ছিল, সেখানে রাতে ফিরেছেন কেন? সকালে তো কোনো কাজ ছিল না, কোনো সরকারি প্রোগ্রামও ছিল না। তাহলে ক্ষতিটা কোথায়? বরং একটা দিন তিনি কাজে লাগাতে পেরেছেন এজন্য তাকে ধন্যবাদ দেওয়া উচিত। সেখানে নিন্দার চেষ্টা এ তো ভালো কথা হতে পারে না। হ্যাঁ, পুতুলের শরীর খারাপ এজন্য যদি কিছু সময় আগে এসে থাকেন তাহলে সেটা তো আদর্শ মায়ের কাজ করেছেন। মানুষ হিসেবে তার নিশ্চয়ই অনেক ত্রুটি আছে, আমাদের সবার আছে। কিন্তু মা হিসেবে তার ত্রুটি আমার মায়ের মতো খুবই কম। চীন সফরে ২১টা সমঝোতা স্বাক্ষর হয়েছে তাতে বাংলাদেশ বেচাকেনা হলো না, ভারতের সঙ্গে ১০ সমঝোতাতে সবকিছু শেষ হয়ে গেল এটা মানতে কেন যেন বেশ কষ্ট হয়। আমরা কোনো কিছুই সার্বিকভাবে বিবেচনা করতে চাই না, করি না। যেটায় আমাদের যতখানি সুবিধা ততখানিই বলি, ততখানি নিয়েই আমরা জড়িয়ে থাকি। দেশের অবস্থা সত্যিই ভালো না। দুর্নীতিতে সব ছেয়ে গেছে। এসব বোন কতটা সামাল দিতে পারবেন তা তিনিই জানেন। তবে এ অব্যবস্থা সামাল দিতে না পারলে কারও কোনো মঙ্গল হবে না। দেশের তো নয়-ই। তাই এখন এই দুরবস্থায় সবাইকে নিজের দিকে ঝোল না টেনে দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে একটু উদারভাবে ভেবে দেখা, চিন্তা করা খুবই প্রয়োজন।

অন্যদিকে কোটা সংস্কার আন্দোলন এক দাবানলের মতো রূপ নিয়েছে। কোটা নিয়ে যত কথা হচ্ছে কেন যেন আমি অনেকের সঙ্গে একমত হতে পারছি না। একদল বলছে, মেধার বিকাশ, মেধার সুযোগ, আরেক দল বলছে কোটা দিয়ে সব মেধা নষ্ট করে ফেলা হচ্ছে। তাহলে যারা মেধার কারবারি তারা ভালোভাবে ডিগ্রি নিয়ে মেধার ভিত্তিতে তাদের কোটা পূরণ করছে। আর যাদের জন্য নির্ধারিত কোটা সেটা মুক্তিযোদ্ধাই হোক, উপজাতিই হোক, শারীরিক প্রতিবন্ধীই হোক তাদের কি কোনো মেধার দরকার হয় না? সরকারি কোনো চাকরিতে কোন পদে যেতে কোটার কারণেই কি তারা সুযোগ পেয়ে যান, তাদের লেখাপড়া করতে হয় না? যে পদের প্রার্থী সেই পদের জন্য তাদের বেসিক এডুকেশনের দরকার হয় না? নাকি এমনি কোটার জোরে তারা সবকিছু পেরে যান? যারা এত মেধার কারবারি তাদের মতোই যারা কোটার সুযোগে নির্বাচিত হন তাদেরও সেসব পূরণ করতে হয়। হ্যাঁ, ভাইবাতে গিয়ে তারা হয়তো ২-১ নম্বরের সুযোগ পান। কিছু মুক্তিযোদ্ধার ছেলে বলে, নাতি নাতকুর বলে, পিছিয়ে পড়া জেলা বলে, শারীরিক প্রতিবন্ধী বলে কেউ তাদের বেসিক এডুকেশন না থাকলে কোটার কারণে কোনো পদ পান না-এই সরল সোজা কথাটা কেন যেন অনেকেই ঘুণাক্ষরেও ভেবে দেখার চেষ্টা করছেন না। আর এটা তো শতসিদ্ধ মুক্তিযোদ্ধাদের নামে ৩০ শতাংশ কোটা এ এক ভন্ডামি। কখনো ৩০ শতাংশ প্রার্থী পাওয়া যায়নি, ভবিষ্যতেও পাওয়া যাবে না। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এত যা ইচ্ছে তাই কথাবার্তা কেন? আজ যারা মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল চাচ্ছে কাল তারা তো বাংলাদেশও বাতিল চাইতে পারে। কেন যেন আমরা একেবারে হালকা-পাতলা হৃদয়হীন হতে চলেছি। দেশের সন্তানদের যেমন স্বাধীনতাবিরোধী অথবা রাজাকার আলবদর বলা মোটেই ঠিক না, তেমনি আন্দোলনকারীদেরও মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধ দেশ নিয়ে কটূক্তি করা মনে হয় একেবারে গাধার কাজ। তাই সবারই সংযত হওয়া উচিত। এটা সত্য, যখন যেখানে যে আন্দোলন হয় সেই আন্দোলনে সরকারবিরোধীরা সহযোগিতা করবে এটাই বাস্তব। এটা গালাগাল করে ঠেকানো যাবে না। সঠিকভাবে সঠিক কৌশলের মাধ্যমে ঠেকাতে হবে। যারা ভালো কৌশলী, যারা ধৈর্য ধারণ করবে, যারা মানুষের মত পক্ষে আনতে পারবে আজ হোক অথবা কাল একসময় তারাই জয়ী হবে। এসব ক্ষেত্রে কোথাও কোনো গোঁজামিলের সুযোগ নেই। এটা মানতেই হবে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বোন শেখ হাসিনার আলোয় যারা জ¦লজ¦ল করছেন তারা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে কোনো সাহায্য নয়, বরং নানাভাবে নানাদিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত করছেন। আর এটা ঠিক, এখন যারা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর চারদিকে ঘিরে আছেন তারা অনেকেই তেমন উপযুক্ত নন। প্রধানমন্ত্রীর এখন নিজের তেমন কিছু করার আছে কি না এটা অনেকের মধ্যেই সন্দেহ সৃষ্টি করেছে। এখন তা রাস্তাঘাটে শোনাও যাচ্ছে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে স্বস্তিতে নেই, দারুণ কষ্টে আছেন এটা তার সেদিনের চীনফেরত সাংবাদিক সম্মেলনে অনেকটা পরিষ্কার হয়ে গেছে। অন্যরা যে যাই বলুন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চীন থেকে মোটেই ব্যর্থ হয়ে ফিরেননি। তবে তিনি মারাত্মক অস্বস্তিতে আছেন। তিনি অন্যদের মতো অনেক কথাই বলেন না বা বলতে পারেন না। তিনি যেভাবে কথা বলেন তার যেমন ভালো আছে, তেমনি খারাপ দিকও আছে। এই যে বলেছেন- ভারত পানি বন্ধ করেছে তারাই তিস্তা করুক, তারাই পানির ব্যবস্থা করবে- এটা মনে হয় কোনো রাষ্ট্রনায়কোচিত কথা না। ভারত তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়িত করলে তারা পানি দেবে এর কোনো গ্যারান্টি কোথায়? ভারত পানি দেবেও না, ভারত পানি আটকেও রাখতে পারবে না। ভারতের বেশি পানি রাখার মতো ক্ষমতা নেই। তাই ভারত যেমন আমাদের দয়া করে পানি দেবে না, ঠিক তেমনি তারা তাদের নিজেদের ডুবিয়ে পানি রাখতেও পারবে না। বাস্তবতার দিকে আমাদের নজর দেওয়া উচিত।

কোটাবিরোধী আন্দোলন শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে সেটাই ভাবনার বিষয়। তবে অনেকেই বলছেন, এটা ছিল অনেকটাই সরকারের ইস্যু। তা যদি হয়ে থাকে তাহলে কাজটি ভালো হয়নি। সরকারে যেসব বুদ্ধিমানরা বাস করে তাদের বুদ্ধির সীমা-পরিসীমা খুব একটা উল্লেখ করার মতো নয়। ড্রাইভারের মাধ্যমে অথবা নিম্নস্তর কর্মচারীদের মাধ্যমে বিসিএস এবং অন্যান্য পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস, লাখ লাখ টাকা দিয়ে পরীক্ষায় পাস করে সরকারি চাকরিতে যোগদান সেখানে তো আর কোটা কাজ করেনি। কোটাওয়ালারা ঘুষ দিয়ে চাকরি নেননি। ঘুষের চাকরিতে সব মেধাধারী। তাহলে এখানে কী হবে? যারা মেধা মেধা করছেন সত্যিই কি তাদের মেধার অত বড়াই করা উচিত। কোটার মধ্যে যারা আছেন তাদের একজনও পরীক্ষায় অংশ নিতে না পারলে, পাস না করলে তাদের কোটা বিবেচনার কোনো সুযোগ নেই। হ্যাঁ, এটা ঠিক, কোটা সংস্কার অত্যন্ত যুক্তিসংগত। কোটা নিয়ে যখন যা বলা হয়েছে কখনো বাস্তব অবস্থা ফুটে ওঠেনি। বিশেষ করে মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা নিয়ে তো নয়ই। জীবনকালেই দেখে গেলাম, মুক্তিযুদ্ধের জন্য এ দেশের শতকরা ৯০ জন মানুষ জীবনপাত করেছে সেই দেশে মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের কীভাবে তাচ্ছিল্য করা হচ্ছে। যেভাবে যাচ্ছে যেভাবে মেধা মেধা করা হচ্ছে মানবিক গুণাগুণ না থাকায় এরা কদিন পরে বাংলাদেশ চাই না, পাকিস্তান চাই, আমেরিকা চাই, আবার ব্রিটেনের তাঁবেদার হতে চাই, কলোনি হতে চাই এসব সেøাগান উঠবে কি না বলতে পারছি না। কোথায় গিয়ে দাঁড়াচ্ছি আমরা? আমার বোনের বাড়ির যে কাজের লোক তাকে আমি দেশে ফিরেই দেখেছিলাম। সে আজকে শত শত কোটি টাকার মালিক, হেলিকপ্টার ছাড়া চলে না। কতটা দুঃখ বেদনা নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এমন কথা বলতে পারেন। এতে স্পষ্ট বোঝা যায়, একা তিনি সোনার বাংলা গড়তে পারবেন না। সোনার বাংলা গড়তে সবার সহযোগিতা লাগবে, সবার শ্রম ঘাম ও সততার প্রয়োজন হবে। বর্তমান সমাজপতিরা সেই পথ কবে করতে পারবেন সেটাই হচ্ছে সব থেকে বড় কথা।

লেখক : রাজনীতিক

www.ksjleague.com

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর