শুক্রবার, ১৯ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

কোটাবিরোধী আন্দোলন

দাবি মেনে নিয়ে আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি করুন

কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের রক্ত ঝরার ঘটনা অপ্রত্যাশিত ও অনভিপ্রেত বললেও কম বলা হবে। গত তিন দিনে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকজন তরুণের প্রাণ যারা কেড়ে নিয়েছে তারা আর যা-ই হোক সুবুদ্ধি ও সুবিবেচনার প্রতিনিধিত্ব করে না। কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা সরকারের প্রতিপক্ষ হিসেবে আবির্ভূত হয়নি। সরকার ২০১৮ সালেই শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে কোটাপ্রথা বাতিল করেছিল। এ বিষয়ে জারিকৃত পরিপত্রের বিরুদ্ধে কোটা সমর্থকদের রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত কোটা বহাল রাখার নির্দেশ দেন। সরকার সে রায়ের বিরুদ্ধে আপিলও করে। এ নিয়ে যে আন্দোলন গড়ে ওঠে তার মোকাবিলায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার সুযোগ ছিল। কোটা সংস্কারের বিষয়ে যেহেতু দৃশ্যত সরকারেরও দ্বিমত নেই, সেহেতু আলোচনায় শিক্ষার্থীদের সামাল দেওয়া সম্ভব হতো বলেই আমাদের বিশ্বাস। সে পথে না গিয়ে সরকার সমর্থক ছাত্র ও যুব সংগঠনের পেশিজীবীরা আন্দোলন ঠেকানোর অপকৌশলে যুক্ত হওয়ার পরই একের পর এক মূল্যবান প্রাণের অপচয় ঘটেছে। গণতান্ত্রিক সমাজে যে কোনো বিষয়ে আন্দোলনে নামার অধিকার সংরক্ষণ করেন নাগরিকরা। আমাদের সংবিধানেও সে অধিকার স্বীকৃত। এ কথা ঠিক, দেশের আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণাধীনে রাখা প্রশাসনের দায়িত্ব। সে ক্ষেত্রে জনগণের জানমাল রক্ষায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর হতেই পারে। তার বদলে কোটা সংস্কার আন্দোলন দমনে যেসব অস্ত্রবাজ হেলমেটধারীর আবির্ভাব ঘটেছে তারা কারা তা খুঁজে বের করা সরকারের কর্তব্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত। এ ব্যাপারে বিশিষ্টজনদের পক্ষ থেকে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি উঠেছে। সরকারও তাতে সায় দিয়েছে। আমাদের বিশ্বাস শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ নিরসনে দ্রুত তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসার পথ খুঁজতে হবে। প্রয়োজনে তাদের দাবি মেনে নিয়ে আস্থার সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। পাশাপাশি শিক্ষার্থী হত্যার প্রতিটি ঘটনায় কারা জড়িত তা খুঁজে বের করে সংশ্লিষ্টদের আইনের আওতায় আনা জরুরি। হতাহতদের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দান সরকারের কর্তব্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর