ক্যান্সারে আক্রান্ত সহজে শনাক্ত হয় না। শেষ পর্যায়ে যখন ধরা পড়ে অনেক ক্ষেত্রেই নিরাময়ের সুযোগ থাকে না। ক্যান্সার চিকিৎসার কার্যকর কোনো ওষুধ আজও আবিষ্কৃত হয়নি। ভ্যাকসিন তৈরির চেষ্টা প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। এ কঠিন বাস্তবতায় দেশে ক্যান্সার আক্রান্তের সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। ২ লক্ষাধিক মানুষ ক্যান্সারে ভুগছে। লাখে গড়ে ১১৪ জন এ মরণব্যাধিতে আক্রান্ত। নারীদের মধ্যে স্তন ক্যান্সারের হার সর্বোচ্চ, ৩৫ শতাংশ। পুরুষের মধ্যে স্বরনালির ক্যান্সার সবচেয়ে বেশি, এরপর পাকস্থলী। অন্যদিকে স্তন ক্যান্সারের পর নারীরা বেশি আক্রান্ত হন জরায়ুমুখের ক্যান্সারে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। ক্যান্সার নিরাময়ের লক্ষ্যে রোগীরা রেডিওথেরাপি, কেমোথেরাপি, হরমোনথেরাপি, অস্ত্রোপচারসহ সহায়ক অন্যান্য চিকিৎসাও নিয়ে থাকেন। যাদের ওপর গবেষণা চালানো হয়েছে, সেসব রোগীর মধ্যে ১৩ শতাংশ কেমোথেরাপি, ১১ শতাংশ সার্জারি এবং প্রায় ৬০ শতাংশ একাধিক চিকিৎসাসেবা নিয়েছেন। এতে পরিপূর্ণ আরোগ্য লাভ না করলেও কষ্ট লাঘব হয়। চিকিৎসাশাস্ত্র বলছে, বংশগত, পরিবেশগত ও কিছু জীবনাচরণের কারণে ক্যান্সারঝুঁকি তৈরি হয়। ফলে সর্বস্তরে সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর বিশেষ জোর দেওয়া আবশ্যক। বেসরকারি হাসপাতালে অত্যন্ত ব্যয়বহুল ও দীর্ঘমেয়াদি এ চিকিৎসা করাতে অনেক পরিবার সর্বস্বান্ত হয়ে পড়ে। অন্যদিকে রাজধানীতে মাত্র একটি বিশেষায়িত সরকারি হাসপাতালে ক্যান্সার চিকিৎসার সুযোগ নেহায়েতই অপ্রতুল। চিকিৎসার জন্য রোগী ও স্বজনদের ভোগান্তি চরমে পৌঁছায়। ক্যান্সারে আরোগ্যলাভের সম্ভাবনা কম। সেজন্য প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধের পদক্ষেপ গ্রহণই উত্তম। দেশে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরও অভাব রয়েছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়োগ এবং প্রয়োজনীয় সেবা নিশ্চিত করতে হবে। চিকিৎসা ব্যয় কমাতেও উদ্যোগ নিতে হবে। এটা সরকারের পবিত্র কর্তব্য।