রবিবার, ২১ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

দেশজুড়ে কারফিউ

ঘোলা পানিতে মাছ শিকার বন্ধ হোক

সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট এবং প্রায় ৮০ জনের প্রাণহানির পর সরকার সারা দেশে কারফিউ জারি করেছে। সহিংস ঘটনায় শুক্রবার নিহত হয়েছেন অন্তত ৪৭ জন। যার মধ্যে শিক্ষার্থী যেমন রয়েছেন তেমন আছেন সাধারণ মানুষ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও। শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কারের যৌক্তিক দাবির প্রতি সরকারের সহানুভূতি থাকা সত্ত্বেও সারা দেশে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে রাজনৈতিক মতলববাজদের কারসাজিতে। তারা জ্বালিয়ে দিয়েছে সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তি। বিপুলসংখ্যক যানবাহন পুড়িয়ে জিঘাংসা চরিতার্থের চেষ্টা করেছে। দুষ্কৃতকারীরা নরসিংদীর কেন্দ্রীয় কারাগারে পরিকল্পিত হামলা চালিয়ে সব কয়েদিকে ছেড়ে দিয়েছে। কারারক্ষীদের অস্ত্রশস্ত্র ও বিপুল পরিমাণ খাদ্যদ্রব্য লুট করেছে। মেট্রোরেল, এক্সপ্রেসওয়েসহ বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। মহাখালীর ডেটা সেন্টারে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে দেশের ইন্টারনেট ব্যবস্থা তছনছ করেছে। প্রবাসী কর্মজীবী স্বজনদের সঙ্গে ইন্টারনেটে কথা বলার সুযোগ থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে দেশবাসী। আন্দোলনকারীরা সাফ সাফ বলে দিয়েছেন চলমান সংঘাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো সম্পর্ক নেই। তাদের আন্দোলন অরাজনৈতিক। ছাত্ররা কারোর রাজনৈতিক উদ্দেশ্য পূরণের হাতিয়ার হবে না। আন্দোলনকারীরা ইতোমধ্যে আইনমন্ত্রীসহ সরকারি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং তাদের আট দফা দাবি পেশ করেছেন। সরকারের পক্ষ থেকে এ দাবির প্রতি ইতিবাচক মনোভাব দেখানো হয়েছে। কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হয়েছে শান্তিপূর্ণভাবে। প্রতিবাদ করার গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকার সমুন্নত রেখে। সে আন্দোলনকে সহিংসতার দিকে কারা ঠেলে দিল তা অবশ্যই তদন্তের দাবি রাখে। আমরা আশা করব আজ আপিল বিভাগে কোটা সংস্কার সম্পর্কে শিক্ষার্থীরা ন্যায়বিচার পাবেন এবং এর মাধ্যমে তারা শিক্ষাঙ্গনে ফিরে যাবেন। তবে যারা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে সামনে রেখে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আবেগকে পুঁজি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টা চালিয়েছে তাদের আইনের আওতায় আনতে সরকার সম্ভাব্য সবকিছু করবে আমরা এমনটিই দেখতে চাই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর