রবিবার, ২১ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন

ভুল বার্তা যাওয়া কাম্য নয়

তথ্যপ্রযুক্তির গতিশীল মাধ্যম ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকায় গোটা বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন বাংলাদেশ। এর ফলে ডিজিটাল পরিষেবা, ব্যবসা-বাণিজ্য, ফ্রিল্যান্সিং, ই-কমার্স সবই বন্ধ। মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবাও ব্যাহত। প্রায় ৬ লাখ ফ্রিল্যান্সার হাত গুটিয়ে বসে আছেন কদিন ধরে। দেশের সংবাদমাধ্যম কর্মীরা সংবাদ আদানপ্রদান এবং তথ্য যাচাইয়ে কঠিন সংকটের মুখে পড়েছেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে অবিলম্বে ইন্টারনেট সেবা চালুর দাবি জানিয়েছে সম্পাদক পরিষদ। অন্যদিকে দেশের একমাত্র রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল বিটিভি ভবনে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে এর সম্প্রচার বন্ধ। আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির যুগে এমন বিপর্যয়কর অবস্থা কল্পনা করা যায় না। লাখ লাখ প্রবাসী দেশে স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে গভীর উৎকণ্ঠায় থাকেন। অনেক গুজব, মিথ্যা খবর ও অপপ্রচার ডালপালা ছড়িয়ে তাদের উৎকণ্ঠাকে আতঙ্কের পর্যায়ে নিয়ে যায়। এদের মাধ্যমে বিশ্ববাসীর কাছে দেশের অবস্থা সম্পর্কে স্বভাবতই অতিরঞ্জিত বার্তা যাচ্ছে। সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে নৈরাজ্য, বিশৃঙ্খলা বা নাশকতা নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যবস্থা নেবে-এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সেখানে মতলববাজদের অনভিপ্রেত আগ্রাসি ভূমিকা উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে ঘি ঢেলেছে। সংঘর্ষ-গুলি-আগুনের তাণ্ডব চলেছে সারা দেশে। শুক্রবার পর্যন্ত তিন দিনে বিপুল প্রাণহানি ঘটেছে। আহত হয়েছেন কয়েক হাজার। পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিন সাংবাদিক প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন অনেকে। শেষ পর্যন্ত শান্তি-শৃঙ্খলা ও জনগণের জানমাল রক্ষায় সারা দেশে কারফিউ জারি এবং সেনা মোতায়েন করতে হয়েছে সরকারকে। এ সবই হয়তো এড়িয়ে যাওয়া যেত শুরুতেই সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে। অনেক প্রাণহানি, ক্ষয়ক্ষতির পরও-এখনো আমরা আশা করব, দায়িত্বশীল মহলের সুবিবেচনাপ্রসূত পদক্ষেপে দ্রুত সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে। গোটা বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগের পথটা খোলা রাখা দরকার সবার আগে। না হলে বিশ্বব্যাপী ভুল বার্তা যাবে, যা দেশের মর্যাদাগত ক্ষতির মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে-যেটা প্রত্যাশিত নয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর