সোমবার, ২২ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

সবটুকু উজাড় করে দিলেও কেউ মনে রাখে না

অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান চৌধুরী

সবটুকু উজাড় করে দিলেও কেউ মনে রাখে না

১. নোবেলজয়ী আর্নেস্ট হেমিংওয়ের কালজয়ী উপন্যাস ‘দ্য ওল্ড ম্যান অ্যান্ড দ্য সি’-এর কাল্পনিক চরিত্র ছিল ৮০ বছরের এক জেলে। তার নাম সান্তিয়াগো। সেই জেলের একটা সংলাপ ছিল এমন, “মানুষ পরাজয়ের জন্য সৃষ্টি হয়নি। তাকে হয়তো ধ্বংস করা যায়, কিন্তু হারানো যায় না।” অথচ খুব অদ্ভুত বিষয় হলো যিনি লিখেছিলেন এই কালজয়ী উপন্যাসটি সেই  আর্নেস্ট হেমিংওয়ে নিজের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন। যে মানুষটা পৃথিবীকে জানিয়েছিলেন মানুষকে ধ্বংস হয়ে গেলেও কখনো পরাজিত করা যায় না,  সেই মানুষটাই আবার জীবন যুদ্ধে পরাজিত হয়ে আত্মহত্যার মতো কাপুরুষতাকে বেছে নিয়েছিলেন। অথচ তিনি বলতেন, “যে কষ্টের কারণে তুমি এখন আত্মহত্যা করতে চাইছ, সেটা কেটে গেলে আবার তুমি দেখবে জীবনটা অনেক সুন্দর।”

কী অদ্ভুত জীবনের বৈপরীত্য! মানুষ যেটা বিশ্বাস করছে বলে সবাই মনে করছে, হয়তো তার বিশ্বাসটাই ঠিক বিপরীত, মানুষ যেটাকে সবার সামনে সত্য বলছে, নিজের সামনে দাঁড়িয়ে সেটাকে সত্য বলে মানতে পারছে না, সবাই যাকে সুখী মানুষ বলে মনে করছে, সে মানুষটা এতটাই দুঃখ বয়ে বেড়াচ্ছে যে সেটা আর কাউকে কখনো বলাই হচ্ছে না। সবকিছুই যেন চলছে বৈপরীত্যর মধ্য দিয়ে, অথচ সবাই সেটা বুঝলেও কেউ সাহস করে সেগুলো বলছে না।

কোথায় যেন একটা অদৃশ্য ভয়, অথচ মানুষের চোখেমুখে সাহসের অলীক ছায়া। পৃথিবী চলছে এমন করেই, সমান্তরাল হলেও চলত, অন্তত বলা যেত ‘দুই ভুবনের দুই বাসিন্দা বন্ধু চিরকাল রেললাইন বহে সমান্তরাল বহে সমান্তরাল।’ কারণ সমান্তরাল হলে প্রতিযোগিতা থাকে না, যে যার মতো করে তার নিজের জীবনকে এগিয়ে নিতে পারত। মন সমান্তরাল হলে বিচ্ছেদ রেখাটা বোঝা যায়, কিন্তু নিজের মনে বৈপরীত্য ঠাঁই নিলে মনটাই পাগল হয়ে যায়।

বলছিলাম আর্নেস্ট হেমিংওয়ের কথা।

তিনি জীবনের কাছে হার মেনেছেন, ধ্বংস হয়ে যাননি, বরং তিনি আজও বেঁচে আছেন তার সৃষ্টির মাধ্যমে। মানুষ পরাজিত হতে পারে, কিন্তু সৃষ্টিকে কখনো ধ্বংস করা যায় না। মনে হতেই পারে তিনি যেভাবে ভেবেছেন, তার জীবনে তার উল্টো প্রতিফলনই ঘটেছে। সেটাইবা কতটা সত্য? সত্য যে কখনো কখনো খুব অসহায় হয়, খুব অসহায়, চারপাশে দাঁড়িয়ে সবাই সত্যটাকে মিথ্যা বলছে, আর একজনমাত্র সত্য বলছে। গণতন্ত্রের কথাই যদি বলি, তবে সত্যটাকে মিথ্যা বলে মেনে নিতে হবে। এটাই যে গণতন্ত্রের নিয়ম, যেদিকে মানুষ বেশি, সেদিকেই হেলতে হবে, হোক সেটা সত্য কিংবা মিথ্যা, যুক্তির সেখানে কোনো দাম নেই। কেন তিনি আত্মহত্যাকে বেছে নিয়েছিলেন, এ নিয়ে এখন পর্যন্ত গবেষণা চলছে। তবে তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু অ্যারন এডওয়ার্ড হোচনার এর পেছনে দুটি কারণ আছে বলে করেন।

প্রথমত, আর্নেস্ট হেমিংওয়ের মনে হচ্ছিল তিনি তার সৃষ্টিশীলতাকে হারিয়ে ফেলছেন, তিনি আর আগের মতো লিখতে পারছেন না। যখনই মানুষের সঙ্গে দেখা হতো, মানুষ তাকে জিজ্ঞাসা করত, এখন কী লিখছেন? অথচ বলার মতো তখন তার কিছু ছিল না। খুব অদ্ভুত একটা অবস্থা, যে মানুষটা মাত্র ছয় শব্দের গল্প লিখেই মানুষের ভিতর গল্পটা নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন ভাবনার সৃষ্টি করতে পেরেছিলেন, সেই মানুষটাই এক সময় ভেবেছে, তিনি নতুন কিছু সৃষ্টি করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছেন। খুব অদ্ভুত এক বৈপরীত্য, নিজেকে আর চেনা যাচ্ছে না, অথচ একদিন কত মানুষকে সেই অচেনা মানুষটা পথ চিনিয়েছে, আজ নিজের পথটাই খুঁজে পাচ্ছে না।

আত্মহত্যার পেছনের দ্বিতীয় কারণটির কথা উল্লেখ করতে গিয়ে অ্যারন এডওয়ার্ড হোচনার বলেছেন, আর্নেস্ট হেমিংওয়ের ভিতরে ভয় ঢুকে গিয়েছিল, তার সব সময় মনে হতো তার পেছনে গোয়েন্দারা লেগে আছে, তাকে গুপ্তহত্যা করতে পারে। কারণ এক সময় তার লেখাকে রাজনীতির শত্রুমিত্রে দেখা হচ্ছিল, যদিও প্রকৃত লেখকরা সব সময় সত্যের পক্ষেই লিখে গেছেন। যেমন আর্নেস্ট হেমিংওয়ে নিজেই বলেছেন, “আপনাকে প্রথমে যা করতে হবে, তা হলো একটি বাক্য লিখতে হবে। তবে যাই লিখবেন সত্য লিখুন।”

যে মানুষটা নিজেই বলতেন, “জীবন সম্পর্কে লিখতে হলে প্রথমে আপনাকে বাঁচতে হবে।” সেই দৃষ্টিকোণ থেকে প্রশ্ন থেকেই যাই, এটা কি হত্যা নাকি আত্মহত্যা। পৃথিবীটাই একটা রহস্য, কেউ কেউ পেছনে দাঁড়িয়ে খেলছে, কেউ না কেউ তো খেলছে, হয়তো অদৃশ্য মুখোশ পরে, চেনা কিংবা অচেনা। সেই মুখোশগুলো কখনো খোলা যায় না, খুলতে গেলে নিজের জীবন-মৃত্যুটাই অন্ধকারে হারিয়ে যায়। নিজেকে তখন আর শনাক্তও করা যায় না।

কোনটা সত্য, কোনটা মিথ্যা? উত্তরটা আমি ঠিক জানি না, তবে, আর্নেস্ট হেমিংওয়ে জানতেন এভাবে, “সত্য বলে কিছুই নেই, কারণ সবই সত্য।” আসলে সত্যের নিজের অস্তিত্ব নেই, সত্য একটা শব্দমাত্র অথচ মানুষ আর মানুষের মনের সর্বত্রই সত্যের বসবাস, কেউ তাকে জাগিয়ে রাখে, কেউ তাকে ঘুম পারিয়ে রাখে।

২. কিছু কিছু মানুষ পর্দার অন্তরালে থেকে সারা জীবন নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে যায়, মানুষের মঙ্গলের জন্য নিজের নাওয়া-খাওয়া, পরিবার-পরিজন পর্যন্ত ভুলে যায়, মানুষের শরীর তো, মাঝে মাঝে মনে হয় ভেঙেচুরে চুরমার হয়ে যাচ্ছে শরীরটা, তারপরও হাসিমুখে সবাইকে সুখী করতে নিজের সর্বস্ব বিলিয়ে দেয়, অথচ এই মানুষটার কথা কেউ মনে রাখে না, সবাই ভুলে যায়। এই নিষ্ঠুর পৃথিবীতে কেউ মনে রাখে না, মনে রাখতে জানে না।

কিন্তু তাতে কী, যে মানুষটা অন্তরালে থেকে নীরবে-নিভৃতে মানুষের জন্য দিনরাত কাজ করে যায়, সেই মানুষটাকে কে মনে রাখল, কে ভুলে গেল সেটা তার কাছে মূল্যবান না, তার কাছে মূল্যবান হলো মানুষের মুখে হাসি ফুটানো। এই হাসিটা দেখতে পেলে তার কাছে আর কোনো কিছুই দামি না।

আচ্ছা একবার ভাবুন তো, সেই মানুষটার কথা যে মানুষটা পাথরে পাথর ঘষে আগুনের মতো বিস্ময়কর প্রযুক্তির জন্ম দিয়ে মানব সভ্যতাকে এগিয়ে নিয়েছিল, তার নাম কি কেউ জানে, তাকে কি কেউ চিনে, কেউ কি তাকে মনে রেখেছে। সম্ভবত উত্তর হবে, না। সেই পর্দার অন্তরালে থাকা মানুষটাও ঠিক এমন, সে সবার ভিতরেই আছে, অথচ কেউ তাকে অনুভব করতে পারছে না।

ভোঁতা অনুভূতি কেবল অভিনেতাদের দেখে, অভিনেতাদের অভিনয়কেই সত্য বলে বিশ্বাস করে, অথচ সেটা যে মানুষের ওপর গিনিপিগের মতো চালানো পরীক্ষা, রাজনীতির চাল, সেটা বুঝতে পারে না। মানুষ সত্যকে ভয় পায়, মিথ্যার মোহে ডুবে যায়। রুশো হয়তো এমনটাই ভাবতেন, প্রকৃতির রাজ্যে মানুষ স্বাধীন, সেখানে সুখ, শান্তি ও আনন্দ মানুষের চিন্তাকে নিজের মতো করে এগিয়ে নেয়, অথচ মানুষ যতই প্রকৃতির রাজ্য ছেড়ে বাণিজ্যিক দুনিয়ার স্বপ্ন দেখতে থাকে, ততই মানুষ পরাধীন হতে থাকে। সময় যত যাচ্ছে, সেই পরাধীনতা আরও বাড়ছে, কারণ মানুষ প্রকৃতির আড়ালে লুকিয়ে থাকা নিঃস্বার্থ মানুষগুলোকে দেখতে পাচ্ছে না, বরং দেখতে পাচ্ছে সেই মানুষগুলোকে যারা নিজেরাও ইট-পাথরের মতো, একটার পর একটা ইট-পাথরের প্রাচীর গড়ছে, মানুষ সেখানেই নিজের চিন্তাকে বন্দি করে ফেলছে।

মানুষকে বন্দি করলে হয়তো মুক্তি মেলে, চিন্তা বন্দি হলে মানুষ খেলার পণ্য হয়ে যায়। যেমন রুশো বলতেন, রাজনীতি একটা খেলা, চালাক লোকেরা খেলে আর মূর্খরা দিনভর তার চর্চা করে। হয়তো এটাই রাজনীতির খেলা, যেখানে মাঠে খেলে রাজনীতিবিদরা যখন যেভাবে খেলা দরকার সেভাবেই, আর গ্যালারিতে বসে হাসি-কান্না, আনন্দ-হতাশায় উত্তেজিত হয় সাধারণ মানুষ, বুঝে, না বুঝে। কারণ কোনটা সত্য, কোনটা রাজনীতি, সেটা যাতে মানুষ কখনো না বুঝে, সেজন্য মানুষকে বোকা বানিয়ে রাখা হয় কিন্তু রাজনীতি যে গরম গরম আলোচনার একটা বিষয় সেটার প্রচারণাটা রাজনীতির স্বার্থেই ঘটে, মানুষের স্বার্থে না। কার পেট ভরলো, কার ভরলো না, কার মাথা গোঁজার ঠাঁই হলো, কার হলো না, এটা রাজনীতি বোঝে না, রাজনীতি বোঝে মানুষকে কীভাবে বোকা বানিয়ে স্বার্থ উদ্ধার করা যায়। রাজনীতি মন্দদের আশ্রয় দেয়, ভালোদের বিতাড়িত করে, রাজনীতি যোগ্যদের অযোগ্য ভাবে, অযোগ্যদের যোগ্য ভাবে।

রাজনীতিতে এখন টাকাই শেষ কথা, ক্ষমতাই শেষ কথা, মানুষ সেখানে গৌণ। রাজনীতির রোগাক্রান্ত হলে মানুষের ভিতরেও সেটা সংক্রমিত হয়, সেটা ক্রমশ বাড়তে থাকে। তারপরও সব খেলা, খেলোয়াড়রা খেলে, সাধারণ মানুষকে নিয়েই খেলে, যতদিন পারে ততদিন ইচ্ছামতো খেলে, খেলা শেষে নিক্ষেপ করে আস্তাকুঁড়ে। পৃথিবী তো এমন করেই চলছে। বিশ্ব রাজনীতিতে বোঝা কঠিন কে কার শত্রু, কে কার মিত্র। হয়তো সাধারণ মানুষ যাদের পরস্পরের শত্রু ভাবছে, তারাই পরম মিত্র, আর যাদের পরস্পরের মিত্র ভাবছে, তারাই পরম শত্রু। ঠিক বুঝে ওঠা কঠিন, না বোঝাটাই হয়তো সবচেয়ে ভালো একটা সল্যুশন।

কবি বিনয় মজুমদার নিজেকে নিয়েই রহস্যের জন্ম দিয়েছেন, সেই অজানা রহস্য নিয়েই বলেছেন, “আমি পনেরো হাজার কবিতা লিখেছি। কেন লিখেছি কেউ জানে না, আমিও জানি না। না লিখলে বাংলা সাহিত্যের ক্ষতি হতো না, আমার ক্ষতি হতো। লিখতে লিখতে বুঝেছি আমি কবিতা লিখতে জানি না। লিখতে লিখতে বুঝেছি কবিতা লিখলে দুঃখ ভোলা সম্ভব। কিন্তু দুঃখ ভুলে গেলে আর কবিতা লেখা যায় না।” খুব অদ্ভুত এক মনস্তত্ব, অথচ মানুষ এখন মনকেই বিক্রি করে দিয়েছে। আনন্দবাজার পত্রিকা পড়ে দেখলাম, এই বিনয় মজুমদারকে একবার প্রশ্ন করা হয়েছিল “আপনাদের সময়ের কোন কোন কবিকে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়? উত্তর দিতে গিয়ে বললেন, প্রথম দুজনের একজন শক্তি- বলে চুপ করে গেলেন। জানতে চাওয়া হয়েছিল, অন্য জন? বললেন, সেটা সময় বলবে।” আসলে অন্যজন কে? নিজেরটা নিজের মুখে বলা যায় না, কিন্তু মানুষ কি কখনো সেই মানুষটার কথা ভাবে। মানুষ চিনেছে তার লেখাকে, অথচ ভুলে গেছে সৃষ্টির পেছনের মানুষটাকেই। কজনইবা চিনে, সেই কবিকে, ছিলেন প্রকৌশলী, হয়েছেন কবি, জন্ম দিয়েছেন রহস্যের, তারপর হারিয়ে গেছেন সবার অলক্ষ্যেই।

মনে পড়ে হোমারের কথা। পৃথিবীর এখনো পর্যন্ত যে চারটি মহাকাব্যের জন্ম হয়েছে, তার অন্যতম দুটি হলো, হোমারের ইলিয়াড ও ওডিসি। মনে করা হয়, খ্রিস্টপূর্ব অষ্টম শতাব্দীতে হোমারের জন্ম হয়েছিল। আসলেই কি হোমার নামে পৃথিবীতে কেউ ছিল, এত বছর আগের একটা মানুষ, তার সন-তারিখ জন্ম হওয়ার অনেক আগের, আর এই সময়টাও নিয়েও যে অনেক বিতর্ক আছে। হয়তো মানুষটার কাল্পনিক একটা ছবি এঁকেছে মানুষ, মানুষটার একটা নাম দিয়ে নতুন চরিত্র সৃষ্টি করেছে, কেউ নামের সূত্র ধরে বলছে মানুষটা অন্ধ ছিল, কেউ বলছে মানুষটা ক্রীতদাস ছিল, কিন্তু সত্যটা কেউ জোর গলায় বলতে পারছে না। হয়তো পুরোটাই মিথলজির মতো, কিন্তু কেউ তো একজন ছিল, যে মানুষটাকে কেউ চিনে না, তার নাম কেউ জানে না, অথচ তিনি লিখে গেছেন দুটি কালজয়ী মহাকাব্য। সেই কাব্যগুলো নিয়ে এখনো অনেক মানুষ গবেষণা করছে, সেগুলোর চুলচেরা  বিশ্লেষণ করছে, অথচ সেই আসল মানুষটা হারিয়ে গেছে কাল্পনিক একটা চরিত্রের কাছে।

এই তো পৃথিবী, কেউ নিজেকে দেখাতে লাজলজ্জা ছেড়ে রাস্তায় নামে, আর কেউ কেউ নিজেকে লুকিয়ে রেখে পৃথিবীর জন্য রেখে যায় ইতিহাস।  খুব অদ্ভুত বিষয় হলো, লজ্জাহীন অযোগ্যরাই ইতিহাসে জায়গা করে নেয়, ইতিহাস সৃষ্টি করে পর্দার আড়ালে থাকা মানুষগুলো কাল্পনিক চরিত্র হয়, ইতিহাসে ঠাঁই হয় না তাদের কখনোই।

পৃথিবীতে কেউ মনে রাখে না, নিজের সবটুকু উজাড় করে দিলেও না, সবাই ভুলে যায়, যার যার তার তার মতো নিজেকে বদলে নেয়, তাতে কি জীবন তো থেমে থাকে না। আবার বিপরীতটাও হয়তো ঘটে, যেমন ঘটেছিল প্রিন্সেস ডায়ানার জীবনে।  প্রিন্সেস ডায়ানার হাসিমাখা মুখ, অথচ ভিতরে ভিতরে আগুনে পোড়া একটা মানুষ, যিনি অস্ফুট কষ্ট বুকে জমিয়ে বলেছিলেন, “আমি যাকে ভালোবাসি, সে ছাড়া পুরো বিশ্ব আমাকে ভালোবেসেছিল।” কোথাও কোথাও পথ থেমে যায়, তারপরও সময় এগিয়ে যায়, ইতিহাসে লেখা থাকে কিছু অতৃপ্তির গল্প। অথচ গল্পের ভিতরের বাস্তবতাটা আর কখনো দেখা হয়ে ওঠে না।

লেখক : শিক্ষাবিদ, ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর

সর্বশেষ খবর