সোমবার, ২২ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

শান্তি ফিরে আসুক

সব পক্ষের সুমতি কাম্য

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ সরকারি চাকরিতে কোটা বহাল সম্পর্কিত হাই কোর্টের রায় বাতিল করে দিয়েছেন। আদালত ৯৩ ভাগ সরকারি চাকরি মেধার ভিত্তিতে ও ৫ ভাগ মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান বা তাদের সন্তান এবং ১ ভাগ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও ১ ভাগ প্রতিবন্ধী এবং তৃতীয় লিঙ্গের জন্য নির্ধারিত করে দিয়েছেন। এর ফলে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের জয় হলো। হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়েছিল সরকারের পক্ষ থেকে। সরকারি চাকরিতে বৈষম্যের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালে কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। সে সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ২০২২ সালে রিট পিটিশন করা হয়। অতি সম্প্রতি সে রিট পিটিশনের শুনানি শেষে প্রদত্ত রায়ে হাই কোর্ট কোটা বহালের রায় দিলে সারা দেশে সংক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন শিক্ষার্থীরা। সরকারের পক্ষ থেকে হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হয় যথানিয়মে। সে আপিল নিষ্পত্তির আগেই তৃতীয় পক্ষের কালো হাত দেশজুড়ে অস্বাভাবিক পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটায়। আন্দোলনকারীদের ওপর বিশেষ একটি ছাত্র সংগঠনের শক্তি প্রয়োগের অপচর্চা আন্দোলনের শান্তিপূর্ণ চেহারা বদলে দেয়। এর সুযোগ নেয় সরকারের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ। সারা দেশে জ্বালাও-পোড়াও তান্ডবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ির আশ্রয় নেয়। যা শতাধিক মানুষের প্রাণহানির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আজ দলমত নির্বিশেষে সব শুভ বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের দাবি, কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সংঘটিত প্রতিটি হত্যাকান্ডের বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও দায় নির্ধারণ করে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার। আশা করা যায়, এর ফলে যেসব শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে তাদের পরিবার ন্যায়বিচার পাবে। সরকারের পক্ষ থেকে স্বীকার করা হয়েছে সহিংসতার সঙ্গে আন্দোলনকারীরা জড়িত নয়। এ বক্তব্য সহিংস ঘটনায় কারা জড়িত তা উদ্ঘাটনে প্রকারান্তরে সরকারের ওপরই দায় সৃষ্টি করেছে। আমরা আশা করব, আদালতের রায় দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করবে। ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করবে। শিক্ষার্থীরা ফিরে যাবেন শিক্ষাঙ্গনে। জাতীয় স্বার্থে সব পক্ষের সুমতি কাম্য।

সর্বশেষ খবর