সোমবার, ২২ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

রাজধানীর ধ্বংসযজ্ঞ

অপরাধীদের চিহ্নিত করুন

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে মাঠে নেমেছিল অপরাজনীতির কুশীলবরা। তাদের কালো হাতের ছোঁয়ায় ধ্বংসযজ্ঞ চলেছে রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে। জনসাধারণ ও রাষ্ট্রের বিপুল সম্পদের ক্ষতি হয়েছে। পুড়েছে অসংখ্য যানবাহন, গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবন, স্থাপনা। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিশে যাওয়া মতলববাজরা হামলা চালিয়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা। মেট্রোরেল স্টেশনে হামলা-ভাঙচুরে বন্ধ হয়েছে চলাচল। সেতু ভবন ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পুড়েছে গুরুত্বপূর্ণ নথি। বিটিভি ভবনে আগুন-ভাঙচুরে বন্ধ রয়েছে সম্প্রচার। বড় ক্ষতি হয়েছে অগ্নিসংযোগের কারণে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ হওয়ায়। বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে দেশ। নজিরবিহীন ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট চলছে, যা আগে কখনো হয়নি। প্রবাসীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছে না পরিবার। অনেক ক্ষতিই অপূরণীয়। অনেক ক্ষত কোনো দিন শুকাবে না। পূর্বাবস্থা ফিরিয়ে আনতে অনেক সময় ও বিপুল অর্থের প্রয়োজন হবে। এই সমুদয় নাশকতা, নৈরাজ্য, অরাজকতা এবং ধ্বংসযজ্ঞের দায় মতলববাজরা এড়াতে পারে না। কোমলমতি তরুণ শিক্ষার্থীরা তাদের প্রাণের দাবি তুলে ধরতে কোনো রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তি করেনি। বরং স্পষ্টভাবে বলেছে, তাদের সঙ্গে রাজনীতির সংশ্লিষ্টতা নেই। তবু এদের নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব পালনের সঙ্গে যে মারমুখী তৃতীয় পক্ষ শামিল হলো- এরা কারা? কারা বিভিন্ন সময় উসকানিমূলক বক্তব্যে উত্তেজনা উসকে দিয়েছে, কে কাকে মাঠে নামিয়েছে, তাদের উদ্দেশ্য কী ছিল- খতিয়ে দেখতে কবে। যাদের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ ভূমিকায় ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন সহিংসতায় রূপ নিল, তাদের মদতদাতাদের চিহ্নিত করা জরুরি। দায়িত্বশীলদের মধ্যে কারা দায়িত্বহীন বক্তব্য দিয়েছেন, তারও হিসাবনিকাশ প্রয়োজন। জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে কেউ নয়। সমস্যা সমাধানে সময়ক্ষেপণই বা করা হলো কেন? শোকে পাথর জাতি। বিবেকের দংশনে পর্যুদস্ত সচেতন শ্রেণির হৃদয়। সময় হয়তো সব সইয়ে দেবে, তবে সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহে ক্ষমতাসীন দল জনমানসের যে বার্তা পেয়েছে, তার চুলচেরা বিশ্লেষণের মাধ্যমে শীর্ষ নেতৃত্বের পরবর্তী কর্মপন্থা নির্ধারণ করা উচিত।

সর্বশেষ খবর