বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

অর্থনীতি পুনর্গঠন

বিভেদের রাজনীতির ইতি ঘটাতে হবে

কোটা সংস্কারের দাবিকে কেন্দ্র করে সৃষ্টি ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে দেশের অর্থনীতি করোনাকালীন সময়ের চেয়েও বেশি বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে। এমনিতেই বিশ্ব মন্দার প্রভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতি কঠিন সময় পার করছে দুই বছর ধরে। কোটা সংস্কারের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন সামনে রেখে রাজনৈতিক মতলববাজরা সরকারকে ঘায়েল করার যে বেপরোয়া তৎপরতা তাতে ইন্টারনেট যোগাযোগের প্রাণকেন্দ্র ডেটা সেন্টারসহ বিপুলসংখ্যক সরকারি স্থাপনা এবং অসংখ্য যানবাহন অগ্নিদগ্ধ হয়। মেট্রোরেল ও এক্সপ্রেসওয়েতেও চলে ধ্বংসযজ্ঞ। বিদেশে অপপ্রচার চালিয়ে প্রবাসীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করা হয়। দেশের অন্যতম শ্রমবাজার আরব আমিরাতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে গিয়ে প্রবাসীরা নিজেদের পাশাপাশি দেশের অর্থনীতির জন্যও সর্বনাশ ডেকে এনেছে। বিক্ষোভের দায়ে সে দেশে ৫৭ বাংলাদেশিকে যাবজ্জীবনসহ দীর্ঘমেয়াদি কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে। বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া বন্ধ রেখেছে সে দেশের সরকার। দেশজুড়ে সন্ত্রাস ও ধ্বংসযজ্ঞের মুখে জানমালের নিরাপত্তা রক্ষায় বেশ কয়েক দিন ধরে বন্ধ রাখার পর গতকাল থেকে খুলেছে সরকারি-বেসরকারি অফিস। পোশাক কারখানায়ও কাজ শুরু হয়েছে। পোশাক কারখানা বন্ধ থাকায় প্রতিদিন ক্ষতি হয়েছে ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। বাজার হারানোর আশঙ্কাও সৃষ্টি হয়েছিল এ খাতের উদ্যোক্তাদের মধ্যে। বন্দর ও যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু হওয়ায় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অতি দ্রুত গতি ফিরে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। নাগরিকদের জানমালের নিরাপত্তা রক্ষায় কার্ফু জারি ও সেনা মোতায়েনে দ্রুত স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। মাত্র চার দিনের ধ্বংসযজ্ঞে দেশের অর্থনীতি যে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে তা এককথায় অপূরণীয়। এ ক্ষয়ক্ষতি পূরণে পুরো জাতিকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রয়াস চালাতে হবে। সংঘাত জাতিকে যে বিভক্তির পথে নিয়ে যাওয়ার বিপদ ঘটিয়েছিল, তা থেকে সরে আসতে হবে। অর্থনীতি পুনর্গঠনই শুধু নয়, বিভেদের যে রাজনীতি জাতির অগ্রযাত্রায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে তা থেকে সরে আসাও জরুরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর