শুক্রবার, ২ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা

বিদ্যমান সংকট

সংঘাত নয় সমাধানের পথ খুঁজতে হবে

যে কোনো সংকটেরই সমাধান আছে। যত জটিলতাই থাক, সেসবের গিঁটগ্রন্থি খুলবে এটাই স্বাভাবিক, সংগত এবং প্রত্যাশিত। কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে জুলাইজুড়ে দেশে যে চরম অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল, তার রেশ এখনো রয়েছে। কারফিউ শিথিল করা হয়েছে, অফিস-ব্যাংক পাড়ায় স্বাভাবিকতা ফিরেছে, ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম খুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেনা টহল অব্যাহত রাখতে হয়েছে, সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। অন্যদিকে শিক্ষার্থীরা এখনো রাজপথে রয়েছেন। নানা দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে বিভিন্ন মহল। এখনো বিক্ষোভ, সংঘাত, গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটছে। পরিস্থিতি এখনো পুরোপুরি শান্ত হয়নি-যেটা দায়িত্বশীল প্রতিটি মানুষের প্রত্যাশা। প্রশ্ন হচ্ছে, সমাধান কোন পথে? বিশিষ্টজনদের মতে, সমস্যা রাজনৈতিক, সমাধানও হতে হবে রাজনৈতিকভাবেই। আত্মজিজ্ঞাসার মাধ্যমে উপলব্ধি করতে হবে, কেন এমনটা হলো? শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন কেন এমন বিধ্বংসী হয়ে এত প্রাণহানি, জাতীয় সম্পদ ধ্বংসের কারণ হয়ে দাঁড়াল। সরকার সমর্থক ছাত্র সংগঠনের ভূমিকা পরিস্থিতি ঘোলা করে সেই ঘোলা পানিতে মাছ ধরার সুযোগ করে দিয়েছে স্বার্থান্বেষী মহলকে। এখন শিক্ষার্থীদের আস্থা অর্জন করে তাদের রাজপথ থেকে ফেরাতে হবে। ভূমিকা রাখতে হবে নীতিনির্ধারক এবং শিক্ষকদের। সরকারি কর্মকর্তারা তাদের দায়িত্ব-কর্তব্যের সীমা অতিক্রম করে, অতি-উৎসাহী ভূমিকা পালন করলে বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় সরকারের জন্য। এটা খুবই খারাপ চর্চা। প্রজাতন্ত্রের কিছু কর্মচারীর অতি-উৎসাহ অতীতেও সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ ও বিতর্কিত করেছে। প্রশ্রয় না দিয়ে, তাদের কথাবার্তা ও কর্মকাণ্ড পেশাদারিত্বে সীমাবদ্ধ রাখার দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হবে সরকারকে। জনগণের প্রকৃত মনোভঙ্গি কী, কোথায় কারা নাশকতার কী ছক কষছে-সে সম্পর্কে সম্যক অবহিত হতে হবে শীর্ষ নেতৃত্বকে। সরকারের কোথাও কোনো ভুল হয়ে থাকলে শুধরে নিতে হবে দ্রুত। রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও আদর্শিক দৃঢ়তা দিয়ে সামগ্রিক পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। অনেক মৃত্যু, ধ্বংস, বিনাশী তাণ্ডবের পরও, শান্তির সুবাতাস দূরে নয়-আমাদের বিশ্বাস।

 

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর