শনিবার, ৩ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা

জামায়াত নিষিদ্ধ

সহিংসতার চর্চা বন্ধ হোক

সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে জামায়াতে ইসলামী এবং ছাত্র-শিবিরসহ এ দলটির সব অঙ্গ সংগঠন নিষিদ্ধ করেছে সরকার। এর আগে গত সোমবার রাতে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের বৈঠকে শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনের আড়ালে দেশব্যাপী ধ্বংসাত্মক কার্যক্রমের জন্য জামায়াত ও এর সব অঙ্গ সংগঠন নিষিদ্ধের সুপারিশ করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনীর পক্ষে অস্ত্রধারণ করেছিল এ দলটি। স্বাধীনতাবিরোধী এ দলকে ১৯৭২ সালে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ধর্মের অপব্যবহারের’ জন্য। আর এবার দলটি নিষিদ্ধ হলো জননিরাপত্তার জন্য হুমকি বিবেচনা করে। প্রতিষ্ঠা লাভের পর এ নিয়ে জামায়াত মোট চারবার নিষিদ্ধ হলো। পাকিস্তান আমলে দুবার নিষিদ্ধ হয়েছিল দলটি। উপমহাদেশে দেশভাগের আগে ১৯৪১ সালে দলটি প্রতিষ্ঠা করেন মাওলানা আবুল আলা মওদুদি। ১৯৫৯ সালে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় উসকানির দায়ে প্রথমবার পাকিস্তানে জামায়াত নিষিদ্ধ হয়। ১৯৬২ সালে মুসলিম পরিবার আইনের বিরোধিতার কারণে ১৯৬৪ সালের ৪ জানুয়ারি জামায়াত আবার নিষিদ্ধ হয়। সর্বশেষ বাংলাদেশে ১৯৭২ সালে সংবিধানের ৩৮ অনুচ্ছেদ অনুসারে নিষিদ্ধ করা হয় জামায়াত। জিয়াউর রহমানের সেনাপতি শাসনামলে ১৯৭৭ সালে ফের রাজনীতিতে আসে জামায়াত। আর তখন থেকে জামায়াতের বিরোধিতা করে আসছিল মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সব দল ও বুদ্ধিজীবীরা। কোটা সংস্কার আন্দোলনে অনুপ্রবেশ করে ব্যাপক সহিংসতা ও জানমালের প্রভূত ক্ষতিসাধনের অভিযোগে নির্বাহী আদেশে জামায়াতকে নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এ নিষিদ্ধের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠন। তবে বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত ছাড়াই নিষিদ্ধ করাকে অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক বলে অভিহিত করেছে জামায়াতের মিত্র দল বিএনপি। গণতান্ত্রিক সমাজে সব মতের অবাধ অধিকার নিশ্চিত করা হয়। তবে গণতন্ত্রবিরোধী কোনো সন্ত্রাসী সংগঠন অগ্রসর গণতান্ত্রিক দেশগুলোতেও নিষিদ্ধ হওয়ার নজির রয়েছে। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পর নাৎসি ও ফ্যাসিবাদী সংগঠন পশ্চিমা বিশ্বের সব দেশেই নিষিদ্ধ। সরকারের সিদ্ধান্ত গণতন্ত্র ও শান্তির জন্য সহায়ক হবে কি না তা এখন দেখার বিষয়।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর