শিরোনাম
মঙ্গলবার, ৬ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা

ছাত্র-গণ অভ্যুত্থান

গণতন্ত্রের পথে হোক উত্তরণ

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের জয় হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে গণ অভ্যুত্থানে ক্ষমতা থেকে পদত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে তিনি দেশত্যাগও করেছেন। কারফিউর মধ্যেও গতকাল রাজপথে নামে লাখ লাখ মানুষ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদের বাধা দেওয়ার কোনো চেষ্টাও করেনি। দুপুর ২টার দিকে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ ও দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার খবর প্রচারিত হওয়ার পর উৎসবে মাতে জনতা। গণভবনের ভিতরে গিয়েও উল্লাসে ফেটে পড়ে তারা। এর আগে সারা দেশের পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করলে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান দেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনে রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। বৈঠকে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ নামের জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হয়েছে দীর্ঘ ২৩ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের ফল হিসেবে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে ছাত্র হত্যার পর যে জনক্ষোভ সৃষ্টি হয় তার পরিণতিতে ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের বিপুল বিজয় নিশ্চিত হয়। ১৯৬৯-এর গণ অভ্যুত্থানেও অনুঘটকের ভূমিকা পালন করে ছাত্ররা। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে ছাত্র-জনতার ভূমিকা ছিল মুখ্য। স্বাধীনতার পর ’৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী গণ অভ্যুত্থানের মুখে সেনাপতি শাসক এরশাদের পতন হয়। তারপর জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার আন্দোলন গণ অভ্যুত্থানে পরিণত হলে গত দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছরের শাসনের অবসান ঘটিয়ে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর এ পদত্যাগের মাধ্যমে গণ অভ্যুত্থানের জয় নিশ্চিত হয়। সারা দেশে জ্বালাও-পোড়াও, সংঘর্ষ ও রক্তপাতের যে কালো অধ্যায় থাবা বিস্তার করে তা থেকে রেহাই পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়। প্রমাণিত হয় মানুষের রক্ত ঝরিয়ে কারও পক্ষে ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকা সম্ভব হয় না। আওয়ামী লীগ সরকার এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিদায় দেশে কর্তৃত্ববাদের বদলে গণতান্ত্রিক শাসন প্রবর্তনের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। দেশবাসীর সামনে সৃষ্টি হয়েছে অজুত সম্ভাবনা। এ সম্ভাবনা কাজে লাগাতে ছাত্রদের তাদের শিক্ষাঙ্গনে ফিরে যেতে হবে। ধ্বংস নয়, দেশ গড়ার জন্য প্রস্তুত হতে হবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে। গণ অভ্যুত্থানের অবিসংবাদিত জয়ের জন্য ১৮ কোটি মানুষের সাহসী জাতিকে অভিনন্দন।

সর্বশেষ খবর