শিরোনাম
মঙ্গলবার, ৬ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা

আর নয় রক্তপাত

বন্ধ হোক হানাহানি

এত রক্ত আর কখনো দেখেনি মুক্তিযোদ্ধাদের বাংলাদেশ। কোটা সংস্কার আন্দোলনের ডাকা অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিনেই রবিবার দেশের ১৯ জেলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১০৪ জন। এদের মধ্যে ১৪ জন পুলিশ সদস্য এবং বাকিরা আন্দোলনকারী ছাত্র, পেশাজীবী ও রাজনৈতিক কর্মী। আন্দোলনকারী, আওয়ামী লীগ কর্মী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষে রাজধানীসহ দেশের ১৯ জেলা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। দেশজুড়ে তৈরি হয়েছে ভীতিকর পরিস্থিতি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা অসহযোগ কর্মসূচিতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক সংঘর্ষে ৬৩ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দেড় শর বেশি আহত মানুষ প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন ঢাকা মেডিকেলে। সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় কয়েক হাজার আন্দোলনকারী থানা ঘেরাওয়ের পর ভিতরে ঢুকে ১৩ পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। নিখোঁজ রয়েছেন বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য। কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার ইলিয়টগঞ্জে হাইওয়ে পুলিশের আরেক সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ছাড়া একই দিন দেশের ১৯ থানাসহ পুলিশের ২৭ স্থাপনায় হামলা করেছে আন্দোলনকারীরা। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন পুলিশের অন্তত ৩০০ সদস্য। সারা দেশে বিজিবির অর্ধশতাধিক সদস্যও আহত হয়েছেন। রাজধানীতে রবিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় আন্দোলনকারীরা ছিল সক্রিয়। পাশাপাশি সক্রিয় ছিল আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের সদস্যরা। পেশাদার অপরাধীরাও আন্দোলনের সুযোগে লুটপাট চালিয়েছে বিভিন্ন স্থানে। কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা শান্তিপূর্ণভাবে তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে প্রথম থেকে। সহিংসতার সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই, বলেছে এমন কথাও। তার পরও দেশজুড়ে দুই সপ্তাহ ধরে চলেছে জ্বালাও-পোড়াও। নির্বিচারে চলছে মানুষ খুন; যা সুবিবেচনাসম্পন্ন কোনো মানুষের কাম্য হতে পারে না। চলমান আন্দোলন কেন্দ্র করে জানমালের বিপুল ক্ষয়ক্ষতি দেশবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়। এ অপ্রত্যাশিত অবস্থার অবসানে শেষ পর্যন্ত সেনাপ্রধানকে বিপর্যয় ঠেকাতে জাতীয় স্বার্থে দৃশ্যপটে আসতে হয়। তিনি সংলাপে বসেন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে। সংঘাতের বদলে সংলাপের মাধ্যমে বিদ্যমান সংকট উত্তরণের পথ খুঁজে পাওয়া যায় সে বৈঠকে। নিশ্চিত হয় জনগণের বিজয়।

সর্বশেষ খবর