শিরোনাম
বুধবার, ৭ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা

গণমাধ্যমে হামলা

অনাকাক্সিক্ষত প্রবণতা বন্ধ হোক

গত দেড় দশকে নানা প্রেক্ষাপটে দেশে গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের হয়রানির ধরনে নতুনত্ব আনা হয়েছিল। অভিনব সব আইন ও নীতিমালার অক্টোপাসে কণ্ঠরোধ করা হয়েছিল। আয়ের অন্যতম উৎস বিজ্ঞাপন দেওয়া-না-দেওয়ার বিশেষ চাপে ফেলা হতো গণমাধ্যমকে। চাইলেই সব কথা বলা যায়নি, লেখা যায়নি। ক্ষমতাসীনরা অনেক সময় নীতি-নৈতিকতা ভুলে অনাচারের  এমন পথ বেছে নিয়েছেন -  যা শেষ পর্যন্ত তাদের জন্য সার্ভিকভাবে কোনো শুভবার্তা বয়ে আনেনি। সেই ’৫২ থেকে শুরু করে ’৬৯, ’৭১, ’৯০ এবং সর্বশেষ ২০২৪-এর গণজাগরণ, গণঅভ্যুত্থানে গণমাধ্যম বরাবরই অকুতোভয় সৈনিকের মতো সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়িয়েছে। রাষ্ট্র-সংস্কারকামী ছাত্র-জনশক্তির অতিসাম্প্রতিক মহাকাব্যিক জাগরণেও গণমাধ্যম যে সর্বাত্মক সহায়ক ভূমিকা রেখেছে তা একটি প্রতিষ্ঠিত সত্যি। সংবাদ মাধ্যমে আন্দোলনের চিত্র জনগণের কাছে তুলে ধরেছে পেশাদারিত্বের সঙ্গে। শক্তি জুগিয়েছে সমাজে ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠার সাহসী পদক্ষেপে পথে নামা তারুণ্যদীপ্ত বীর সংগ্রামীদের প্রতি। কিন্তু অত্যন্ত হতাশা ও দুর্ভাগ্যের বিষয় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে, অসহযোগের প্রথম দিন থেকে শুরু করে ৫ জুলাই সরকার পতনের দিন পর্যন্ত, রাজধানীতে বিভিন্ন গণমাধ্যমের যানবাহন, সাংবাদিকদের ব্যবহার্য সামগ্রী আক্রান্ত ও ধ্বংস হয়েছে। পুড়েছে গাড়ি, ভাঙা হয়েছে ক্যামেরা, লাঞ্ছিত হয়েছেন পেশাগত কাজে নিয়োজিত সংবাদকর্মীরা। বেশ কয়েকজন নিহত হয়েছেন, আহতের সংখ্যা অনেক। কিছু উচ্ছৃঙ্খল, অতিউৎসাহী কর্মী এসব করেছে, যা শিক্ষার্থীদের মহান অর্জনে কাদার ছিটা লাগিয়েছে। বিব্রত করেছে বিবেকবানদের। অনাকাক্সিক্ষত প্রবণতা বন্ধ হোক। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে জাতির স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। দীর্ঘদিনের কর্তৃত্ববাদী শাসনের পতন ঘটেছে। এখন দল-মত-ধর্ম নির্বিশেষে সবাইকে নতুন আলোর এক উদ্ভাসিত উজ্জ্বল আলোয় এসে দাঁড়াতে হবে। এখন আর কোনো বিদ্বেষ-বিভাজন নয়। হামলা-ধ্বংস নয়। সবাইকে চোখ-কান খোলা রেখে এ পাহারাটা দিতে হবে।

সর্বশেষ খবর