শনিবার, ১০ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা

অন্তর্বর্তী সরকার

গণতন্ত্র ও রাষ্ট্র সংস্কারে জিততে হবে

নোবেল লরিয়েট ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নিয়েছেন। তাঁর নেতৃত্বে ১৭ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ গঠিত হয়েছে। কর্তৃত্ববাদের অবসান ঘটিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে গণতন্ত্রের পথে অভিযাত্রা। কর্তৃত্ববাদের থাবায় দেশের অর্থনীতি উল্টো পথে চলা শুরু করেছিল দুই বছর আগে থেকে। মাৎস্যন্যায় অবস্থার উদ্ভব ঘটেছিল দেশজুড়ে। মাছদের জগতে যেমন ছোট মাছ খেয়ে ফেলে বড় মাছ, তেমনি সমাজের দুর্বলদের গ্রাস করেছে সবলরা। ক্ষমতাহীনরা ক্ষমতাধরদের যথেচ্ছার শিকার হয়েছে। তছনছ হয়ে গেছে রাষ্ট্রের সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। খেলাপি ঋণ আর বিদেশে অর্থ পাচার দেশের অর্থনীতিকে ফোকলা করেছে। সামাজিক মূল্যবোধে আঘাত হানা হয়েছে নিরন্তর। মুক্তিযুদ্ধের গণতন্ত্র, সাম্য ও কথা বলার স্বাধীনতা জিম্মি হয়ে পড়েছিল নব্য ফ্যাসিবাদের কারসাজিতে। ড. ইউনূসের নতুন সরকারের সামনে এখন গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা শুধু নয়, রাষ্ট্রের সর্বক্ষেত্রে সংস্কার এবং সবকিছু সুস্থ ধারায় ফেরানোও বড় চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে রাষ্ট্রের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সাজাতে হবে নিষ্ঠার সঙ্গে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জনগণের বাহিনী হিসেবে রূপান্তরের কঠিন দায়িত্ব পালন করতে হবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে। ব্যবসা-বাণিজ্যে ফিরিয়ে আনতে হবে সুস্থ ধারা। দেড় দশক ধরে অপরাজনীতির কুশীলবদের কাছে জিম্মি হয়েছিলেন ব্যবসায়ী সম্প্রদায়। পরিণতিতে দেশে বিনিয়োগের খরা দেখা দেয়। এর প্রভাব পড়ে বিদেশি বিনিয়োগেও। রুদ্ধ হচ্ছিল কর্মসংস্থানের সুযোগ। সে অবস্থার উত্তরণে ব্যবসা ক্ষেত্রে আস্থার পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে। কর্তৃত্ববাদ ও নব্য ফ্যাসিবাদ আর কখনো যাতে মাথাচাড়া দিতে না পারে তা নিশ্চিত করা সময়ের দাবি। শান্তিতে নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস একজন অর্থনীতিবিদ। উপদেষ্টা পরিষদে বেছে নেওয়া হয়েছে সুশীল সমাজের সত্যিকারের যোগ্য লোকদের। আমাদের বিশ্বাস, কঠিন হলেও রাষ্ট্র সংস্কার ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার কঠিন চ্যালেঞ্জে জয়ী হবে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ফসল অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর