রবিবার, ১১ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা

বৈপ্লবিক সিদ্ধান্ত

ছাত্রদের ওপর আস্থা ইতিবাচক ফল দেবে

অন্তর্বর্তী সরকারের ১৭ সদস্যের মধ্যে দুজনই ছাত্র। দেশের ইতিহাসে মন্ত্রী বা মন্ত্রীর মর্যাদায় শিক্ষার্থীদের সরকারে ঠাঁই পাওয়ার ঘটনা এটিই প্রথম। যা একটি নজিরবিহীন ঘটনা। তবে দেশবাসীর জন্য অপেক্ষা করছে আরও বড় চমক। শিক্ষার্থীদের নেওয়া হবে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সহ-উপদেষ্টা হিসেবে। উপদেষ্টা পরিষদের প্রথম বৈঠকেই নেওয়া হয়েছে এমন সিদ্ধান্ত। প্রশ্ন উঠতে পারে শিক্ষার্থীদের সরকার পরিচালনার এত বড় গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব দেওয়া কতটা যৌক্তিক। এ প্রশ্নের জবাবে বোদ্ধাজনরাও স্বীকার করবেন দেশকে নতুনভাবে সাজাতে তারুণ্যের ওপর ভরসা করা ছাড়া গত্যন্তর নেই। দেশে দুর্নীতি নেই এমন কোনো সরকারি অফিস নেই। মূল্যবোধের সংকট সব ক্ষেত্রেই। নির্বাচনব্যবস্থা ভেঙে পড়া নয়, ধূলিসাৎ হয়েছে নির্মমভাবে। নির্বাচনে ভোট কারচুপির ব্যাপারে অসন্তোষ দেশজুড়ে। এ কারচুপি বন্ধ হলেও স্বচ্ছ নির্বাচন করা যাবে তেমনটি ভাবাও বোকামি। কারণ নির্বাচনে প্রার্থীরা যে অঙ্কের অর্থ খরচ করতে পারেন তার চেয়ে শতগুণ খরচ করে সংসদ সদস্য বনে যাওয়ার রেকর্ড অজস্র। স্বচ্ছ নির্বাচনব্যবস্থা চাইলে টাকা দিয়ে ভোট কেনার সংস্কৃতি থেকে সরে আসতে হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তারুণ্যের সাহসই দরকার সবচেয়ে বেশি। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি জাতীয় জীবনের প্রধান সমস্যা। এই একটি সমস্যাই পতিত সরকারের পায়ের তলা থেকে মাটি সরিয়ে দেয়। বাজার মনিটরিংয়ের মাধ্যমে মুনাফাখোর ব্যবসায়ীদের লকলকে জিহ্বা যে সংবরণ রাখা যায় তা আমাদের শিক্ষার্থীরা, আমাদের সন্তানরা ইতোমধ্যে প্রমাণ করেছেন। নিত্যপণ্যের দাম কমতে শুরু করেছে। জনগণের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে যে জুলাই অভ্যুত্থানে তার সুফল অনুভব করতে পারছে দেশবাসী নিত্যপণ্যের বাজারে গিয়ে। প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে সহ-উপদেষ্টা নিয়োগ হলে লাল ফিতার দৌরাত্ম্যের অবসান ঘটবে। ১ টাকার মাল ১০০ টাকায় কিনে সরকারি অর্থের হরিলুট বন্ধ হবে শক্তভাবে। সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত জাতি হিসেবে যে বদনাম গড়ে উঠেছে তিন দশকের বেশি সময় ধরে তা থেকে রেহাই পাবে জাতি। তারুণ্যের অংশগ্রহণে দেশে যুগোপযোগী রাজনীতির বিকাশেও অবদান রাখবে উপদেষ্টা পরিষদের বৈপ্লবিক সিদ্ধান্ত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর