রবিবার, ১১ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা

আইনশৃঙ্খলা

জনজীবনে স্বস্তি ফিরুক

সরকার পতনের পর দেশজুড়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেকাংশেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। ছাত্র-জনতার বিজয়োল্লাসে অতিউৎসাহী অনেকে আবেগের স্রোতে ভেসে উচ্ছৃঙ্খল ও অনৈতিক কাজে অংশ নেয়। তাদের সঙ্গে মিশে পেশাগত অপরাধী চক্র চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই ও লুটতরাজে মেতে ওঠে। স্বার্থান্বেষী মহল বিভিন্ন নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে মদত জোগায়। সুযোগসন্ধানীরাও নানা কৌশলে নৈরাজ্য চালাতে থাকে। এমন কঠিন ক্রান্তিকালে পুলিশ বাহিনীর অনুপস্থিতিতে কার্যত আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়ে। বাধ্য হয়েই স্বতঃপ্রণোদিত ছাত্র-জনতা, এমনকি এতিমখানার শিক্ষার্থীরা ঢাল হয়ে দাঁড়ায় সংখ্যালঘুদের মন্দির, উপাসনালয়, বাড়িঘরসহ বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থান রক্ষায়। ড. মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেওয়ার আগেই দেশে ফিরে বিমানবন্দরে বলেছিলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঠেকানোই প্রথম ও প্রধান কাজ। কোনোরকম সহিংসতা, ভাঙচুর, সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন যেন না হয়, সে আহ্বানও জানান তিনি। শপথ গ্রহণের পরও তিনি এ বিষয়ে বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। পুলিশ পুরোপুরি কাজে না ফেরায় দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি পায় ডাকাত, ছিনতাইকারী, সন্ত্রাসীদের। পরিবার পরিজন ও সম্পদ রক্ষায় লাঠি-বাঁশ-বাঁশি নিয়ে দল বেঁধে পাহারা বসাতে হয় রাজধানীসহ বিভিন্ন শহরের পাড়া-মহল্লায়। এটা কোনো কাম্য বিষয় নয়। যার কাজ তাকেই করতে হয়। অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ফেরানোই বড় চ্যালেঞ্জ। আর পুলিশের প্রতি মানুষের আস্থা ফেরানো হবে এক নম্বর কাজ। পুলিশ সংস্কারের মাধ্যমে এর ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে। আশার বিষয়, অনেক থানায় সীমিত পরিসরে কাজ শুরু হয়েছে। আইজিপিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সাধারণ পুলিশ সদস্যদের নিরাপত্তা রক্ষা ও অন্যান্য সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজছেন। গণ আন্দোলনে নিহত পুলিশ সদস্যদের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ এবং আহতদের উন্নত চিকিৎসার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। আশা করা যায়, সহসাই পুলিশ পেশাদারিত্বে সক্রিয় হবে। আর তাতে সমাজে আইনশৃঙ্খলা এবং জনজীবনে স্বস্তি ফিরে আসবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর