সোমবার, ১২ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা

জাগো বাহে কোনঠে সবায়

বিভেদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে

বাংলাদেশের মানুষের জন্য ৫ আগস্ট এক আলোকিত দিন। যে দিনে ১৮ কোটি মানুষের কথা বলার স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। দীর্ঘ ৩৬ দিনের স্বৈরাচারবিরোধী এ স্বাধীনতার লড়াইয়ে ৫ শতাধিক মানুষ প্রাণ দিয়েছেন। জনগণের স্বাধীনতা অর্জনের এই মহাকাব্যের নায়ক আবু সাঈদ। যার রক্ত বাংলাদেশের ছাত্রসমাজকে কর্তৃত্ববাদের বিরুদ্ধে লড়তে উদ্বুদ্ধ করেছে। কৃতজ্ঞ জাতি জুলাই গণ অভ্যুত্থানের ফসল অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস শপথ নেওয়ার পর রাজধানীর বাইরে প্রথমেই ছুটে গেছেন রংপুর। জুলাই অভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের বাড়িতে। হতদরিদ্র পরিবারের মেধাবী সন্তান আবু সাঈদের স্বপ্ন ছিল বিসিএস দিয়ে চাকরি পাবেন। ঘোচাবেন পরিবারের গরিবি হাল। বাবা-মা, ভাই-বোনদের দুঃখ ঘোচাবেন। কোটাপ্রথা ছিল সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে একটা বড় বাধা। তাই তিনি কোটা সংস্কার আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন কর্তৃত্ববাদীদের সব ভ্রুকুটি তুচ্ছ করে। শান্তিপূর্ণ মিছিলে তিনি নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন সামনে থেকে বুক চিতিয়ে। সে সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হন তিনি। পতিত কর্তৃত্ববাদী সরকার আবু সাঈদ হত্যাকান্ড নিয়ে অনেক নাটক সাজালেও তারাও শেষ অবধি স্বীকার করে পুলিশ তাকে অন্যায়ভাবে হত্যা করেছে। অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান জুলাই অভ্যুত্থানের মহানায়ক আবু সাঈদের বাড়িতে গিয়ে বলেছেন- এই বাংলাদেশ আবু সাঈদের বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশে কোনো ভেদাভেদ নেই। জাতি ধর্ম নির্বিশেষে এই মাটির সন্তানদের রক্ষা করা আমাদের কর্তব্য। এটি সবাইকে নিশ্চিত করতে হবে। আবু সাঈদ যেমন দাঁড়িয়েছেন - আমাদেরও সবাইকে বিভেদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। আমরা সবাই বাংলাদেশের সন্তান। আবু সাঈদের মা সবার মা এবং সবার মা আবু সাঈদের মা। জাতীয় বীর আবু সাঈদের বাড়িতে গিয়ে জাতির পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা জ্ঞাপন এবং বক্তব্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। এ বক্তব্যে আবু সাঈদের মতো যারা শহীদ হয়েছেন, যারা আহত হয়েছেন তাদের পরিবারের পাশে জাতিকে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যারা জনগণের বিজয় নস্যাৎ করতে চায়, যারা বিভেদের বীজ বুনে নাশকতায় জড়িত হতে চায় তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে কঠোর হুঁশিয়ারি। জাগো বাহে কোনঠে সবায়।

সর্বশেষ খবর