শিরোনাম
সোমবার, ১২ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা

ছুটির দিনেও কাজ

রাষ্ট্র সংস্কারে সফলতা আসুক

ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি এ পি জে আবদুল কালামের বিখ্যাত উক্তি : ‘স্বপ্ন সেটা নয়, যেটা মানুষ ঘুমিয়ে দেখে। স্বপ্ন সেটাই, যেটা পূরণের প্রত্যাশা মানুষকে ঘুমুতে দেয় না।’ জাতির সামনে এখন সেই চ্যালেঞ্জ। সমাজে সমতাভিত্তিক ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে ছাত্র-জনতার রক্তের অর্জন যেন স্বপ্ন পূরণেও সফল হয় - এটাই চ্যালেঞ্জ। খুব কঠিন সময়ে দায়িত্ব নেওয়া অন্তর্বর্তী সরকারের সামনে পাহাড়সমান কাজের স্তূপ। সব ক্ষেত্রে জমে ওঠা জঞ্জাল দূর করাই রাষ্ট্র সংস্কারের প্রথম কাজ। গতি ফেরাতে হবে উৎপাদনের সব ক্ষেত্রে। অর্থনীতির চাকা ঘোরাতে হবে। বন্দরগুলো সচল করতে হবে। মানুষের জীবন-জীবিকার উন্নয়ন ঘটাতে হবে। স্বচ্ছ-সক্রিয়তার চর্চা প্রতিষ্ঠা করতে হবে প্রশাসনে। অবিবেচনাপ্রসূত দলীয়করণে যেসব দুর্বৃত্তায়নের দানব তৈরি হয়েছিল, তার সমূলে বিনাশ জরুরি কর্তব্য। বিন্দু বিন্দু বৈষম্য, উপেক্ষা, দুর্নীতি জমে সিন্ধুসম ক্ষোভের আগুনে জ্বলে ওঠে দেশবাসী। জুলাইজুড়ে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ, সংঘাত-সংঘর্ষ, আগুন-গুলিতে শিশু-কিশোরসহ কয়েক শ তাজা তরুণের প্রাণ গেছে। বুক-ভাঙা এ ক্ষতি অপূরণীয়। সেই সঙ্গে যানবাহন, ভবন-স্থাপনা, শিল্পকারখানায় যে ধ্বংসযজ্ঞ চলেছে সে ক্ষত শুকাতেও সময় লাগবে। অচলাবস্থা রয়েছে অনেক ক্ষেত্রে। এগুলো কাটিয়ে উঠতে পা চালিয়ে হাঁটতে হবে, জোর কদমে ছুটতে হবে। রাষ্ট্র সংস্কার চাট্টিখানি কথা নয়। আশাব্যঞ্জক তৎপরতা দেখা গেছে উপদেষ্টাদের মধ্যে। শনিবার ছুটির দিনেও মন্ত্রণালয়ে উপস্থিত ছিলেন বেশ কজন। তারা অর্থনীতির গতি স্বাভাবিক করার উপায় নিয়ে আলোচনা করেছেন। শিল্প খাতে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। গণ আন্দোলনে হত্যায় জড়িতদের দ্রুত বিচারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা কঠিন বার্তা দিয়ে আশা প্রকাশ করেছেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সহসাই পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। এটাই এ মুহূর্তে প্রধান কাজ। কঠিন ক্রান্তিকালে হাল ধরা জাতির আস্থাভাজন অভিজ্ঞজনরা অঙ্গীকারকৃত সংস্কার বাস্তবায়নে সর্বাগ্রে করণীয় চিহ্নিত করেছেন। দেশে অফুরন্ত কর্মশক্তি আছে। তারুণ্যের এভারেস্ট ছোঁয়া সাহসের উচ্চতা দেখিয়ে গেছেন শহীদরা। কদিন ধরে সড়কে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে দেখালেন ছাত্রছাত্রীরা। বাড়িঘর পাহারা দিলেন সাধারণ জনগণ। দিন-রাতের বিচার করার সময় এখন নয়। ছুটির দিনে অবকাশ-যাপনেরও সুযোগ নেই। দেশ এখনো বিভিন্ন অশান্তিতে অস্থির। অরাজকতা সৃষ্টির জন্য ওত পেতে আছে মতলবি মহল। রাজনীতি-কূটনীতির নানা শরাঘাত আছে। এর মধ্যেই শক্ত হাতে হাল ধরতে হবে কর্ণধারদের। নির্ভুল দৃঢ়তায় লক্ষ্যভেদ করতে হবে। রাষ্ট্র সংস্কারে শতভাগ সাফল্য অর্জন কামনা করে জাতি।

সর্বশেষ খবর