মঙ্গলবার, ২০ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা

সংস্কার সব ক্ষেত্রে

গণতন্ত্রের স্বার্থেই আগে প্রয়োজন

দেশের মালিক-মোক্তার ১৮ কোটি মানুষ। তাদের স্বার্থ রক্ষায় গণতন্ত্রের কোনো বিকল্প নেই। দীর্ঘ পৌনে ১৬ বছরের কর্তৃত্ববাদী শাসন শুধু দেশবাসীর গণতান্ত্রিক প্রত্যাশার প্রতি ভ্রƒকুটি প্রদর্শন করেনি, ধ্বংস করেছে সাংবিধানিক সব প্রতিষ্ঠান। আর্থিক ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রক ব্যাংক-বিমাকে ব্যবহার করা হয়েছে লুটপাটের মৃগয়া ক্ষেত্র হিসেবে। বাংলাদেশে নির্বাচন কমিশন নামের একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান থাকলেও ২০০৭ সালের পর দেশে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে শুরু করে সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত কোনোটিই সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে তা বিগত সরকারের সমর্থকরাও বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবেন না। দেশে মানবাধিকার কমিশন নামের প্রতিষ্ঠান পোষা হয় রাষ্ট্রের টাকায়। কিন্তু তারা কারোর মানবাধিকার নিশ্চিত করেছে এমন কোনো নজির নেই। বিচারব্যবস্থা পরিণত হয়েছিল হিজ মাস্টার্স ভয়েসে। দুর্নীতি-লুটপাটের চর্চা এ দেশে চলে আসছে হাজার বছর ধরে এ কথা যেমন ঠিক, তেমন গত ১৫ বছরে সেটি যে এভারেস্ট পর্বতকেও ডিঙিয়ে গেছে তা এক সত্যি। এ অবস্থার আগে গণতন্ত্র, আইনের শাসন মানবাধিকার আশা করা প্রহসনের শামিল। রবিবার বিদেশি কূটনীতিকদের এক ব্রিফিং অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস যৌক্তিক কারণেই বলেছেন, ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরকার দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে। দেড় দশকের নৃশংস দমনপীড়নে গণতান্ত্রিক অধিকার দমন করা হয়েছে। বিচার বিভাগ ভেঙে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচন কমিশন, বিচার বিভাগ, বেসামরিক প্রশাসন, নিরাপত্তা বাহিনী এবং গণমাধ্যমের প্রয়োজনীয় সংস্কার করেই একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে প্রায় ৭০০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে জাতিসংঘের হিসাবেই। প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা কত তা খুঁজে বের করতেও দরকার সুনির্দিষ্ট তদন্ত। দেশে গণতন্ত্র নামের প্রাণবন্ত বৃক্ষ রোপণ করতে চাইলে তার আগে আগাছা নিধনে জোর দিতে হবে। সব ক্ষেত্রে সুশাসন নিশ্চিত করারও বিকল্প নেই। টেকসই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার স্বার্থেই সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের সংস্কার সময়ের দাবি। তা না করে নির্বাচন হলে তা হবে ঘোড়ার আগে গাড়ি জুড়ে দেওয়ার শামিল।

সর্বশেষ খবর