শুক্রবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা

বিদেশে অর্থ পাচার

ফেরত আনতে চাই নিরন্তর চেষ্টা

বাংলাদেশ কয়েক দশক ধরে বিশ্বের অন্যতম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে পরিচিতি লাভ করছে। এ দেশের অতীতের শাসকরা হয়তো এটিকে কৃতিত্ব বলেও ভেবেছেন। যে কারণে একাধিকবার বিশ্বের শীর্ষ দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে পরিচিতি অর্জনের পরও তারা নির্বিকারই থেকেছেন। বিগত পৌনে ১৬ বছরের প্রশ্নবিদ্ধ শাসনে দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক মর্যাদায় প্রতিষ্ঠা করার কসরৎ চলেছে। এ সময় দেশ থেকে কয়েক লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে বিদেশে। দুই বছরের মধ্যে ডলারের দাম ৮৫ থেকে ১২০ টাকায় পৌঁছানোর প্রধান কারণ ছিল দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ পাচার। এ অনৈতিক কর্মকান্ডে রাজনীতিক, আমলা আর অসৎ ব্যবসায়ী কেউ পিছিয়ে ছিলেন না। বিদেশে অর্থ পাচারের ঘটনা স্বীকার করেছে অতীতের প্রতিটি সরকার। তা ফিরিয়ে আনার অঙ্গীকারও কম হয়নি। কিন্তু বোধগম্য কারণেই কেউ সে উদ্যোগ নেননি- কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে সাপ বেরিয়ে আসার ভয়ে। বর্তমান সরকারের কর্ণধারদের মধ্যে সে শঙ্কা না থাকায় তারা এ বিষয়ে শুরু থেকেই তৎপর হয়ে উঠেছেন বলে মনে হচ্ছে। বিগত সরকারে থাকা যেসব ব্যক্তি যুক্তরাজ্যে অর্থ পাচার করে বাড়িঘরসহ নানা সম্পদ গড়েছেন, সেই অর্থ ফেরত আনতে দেশটির সহায়তা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ কুকের বৈঠকে এ বিষয়ে বন্ধুদেশ যুক্তরাজ্যের সহায়তা চাওয়া হয়। বিশেষত যুক্তরাজ্যে বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূূত নাগরিকের বসবাস। তাদের অনেকেই সেখানে আর্থিক ও রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত। বাংলাদেশের বিপুল সংখ্যক মানুষের বাড়ি ও ব্যবসা রয়েছে যুক্তরাজ্যে। সুনির্দিষ্টভাবে কোনো ব্যক্তির তথ্য না জানতে চাইলেও যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। আমরা আশা করব অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান তার ব্যক্তিগত প্রভাব কাজে লাগিয়ে সিঙ্গাপুর, কানাডা, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে পাচারকৃত অর্থের একাংশ ফেরত আনার উদ্যোগ নেবেন। অর্থ পাচারের সব ফাঁকফোকরও বন্ধ করা হবে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর