শুক্রবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা

ভয়াবহ বন্যা

বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ান

ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট হঠাৎ ভয়াবহ বন্যায় দেশের অন্তত ১১ জেলার কয়েক শ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি এবং ঘরছাড়া হয়েছে লাখ লাখ মানুষ। ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় অর্ধ কোটি মানুষ। অসংখ্য গ্রামীণ সড়ক আর বিস্তীর্ণ ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে অগণন পুকুর ও খামারের মাছ। ফেনীর তিন উপজেলার অর্ধশত গ্রাম জলমগ্ন। তলিয়ে গেছে ফেনী শহর। নোয়াখালীর আট উপজেলায় জলাবদ্ধতা প্রকট। খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ। ফটিকছড়ির ১৮ ইউনিয়ন প্লাবিত। লক্ষ্মীপুরে হঠাৎ এত পানি নিকট অতীতে দেখেনি মানুষ। হবিগঞ্জে নদনদীর পানি প্রবাহিত হচ্ছে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে। বন্যা ছোবল হানছে একের পর এক জনপদে। গণমাধ্যমের খবর, ভারতের ত্রিপুরায় বন্যা দেখা দেওয়ায় পরিস্থিতি মোকাবিলায় তারা সীমান্ত এলাকায় অবস্থিত ডুম্বুর পানিবিদ্যুৎ প্রকল্পের গেট খুলে দিয়েছে। টানা বৃষ্টির সঙ্গে পাহাড়ি ছড়া ও নদনদী দিয়ে উজান থেকে তীব্র বেগে ধেয়ে আসছে এ পানির প্রবাহ। এর তোড়ে কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট ও মৌলভীবাজারে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। এর মধ্যেই দুজনের মৃত্যু এবং কয়েকজন নিখোঁজের খবর এসেছে। ভারত অবশ্য বাংলাদেশে বন্যার জন্য ত্রিপুরায় বাঁধ খুলে দেওয়াকে কারণ হিসেবে মানতে নারাজ। এদিকে সার্বিক পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠছে দ্রুত। মঙ্গলবারই পানিবন্দি মানুষকে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যেতে শুরু করেন স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীরা। এগিয়ে আসেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। বাস্তব অবস্থার গুরুত্ব বিবেচনায় সেনাবাহিনী, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ এবং কোস্টগার্ডও উদ্ধার তৎপরতায় যুক্ত হয়েছে। পানিবন্দি পরিবারগুলো নারী-শিশু-বৃদ্ধ এবং গৃহপালিত পশু-প্রাণী নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে। রান্নাবান্না সম্ভব হচ্ছে না। বিষধর সাপসহ পোকামাকড়ের আতঙ্কে সময় কাটছে তাদের। রয়েছে পানিবাহিত অসুখের শঙ্কা। বন্যাদুর্গতদের জরুরি শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি এবং বিভিন্ন রোগের প্রাথমিক চিকিৎসা। এদের পাশে দাঁড়ানো একান্ত কর্তব্য। আরও দু-এক দিন ভারী বৃষ্টির আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ রকম একটা সংকটময় সময়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট সব বিভাগ ছাড়াও সর্বোচ্চ সহযোগিতার দুই হাত বাড়িয়ে এগিয়ে আসতে হবে সমাজের বিত্তবান শ্রেণি ও মহলকে।

 

 

 

 

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর