শিরোনাম
রবিবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা

মানুষ মানুষের জন্য

এই ঐক্য অটুট রাখতে হবে

ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণেই বাংলাদেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ জনপদ। সাইক্লোন, টর্নেডো, বন্যা-জলোচ্ছ্বাস মোকাবিলা করেই এ দেশের মানুষ টিকে আছে হাজার বছর ধরে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি মনুষ্য সৃষ্ট দুর্যোগেও কখনো কখনো আক্রান্ত হয় এ দেশের মানুষ। দেশে বর্তমানে যে ভয়াবহ বন্যার তান্ডব চলছে তা কতটা প্রাকৃতিক আর কতটা মনুষ্য সৃষ্ট তা নিয়েও প্রশ্ন কম নয়। ১৯৮৮ এবং ১৯৯৮ সালে ভয়াবহ বন্যার ছোবল সয়েছে বাংলাদেশের মানুষ। এবারের বন্যা অতীতের দুই বন্যাকে ছাড়িয়ে যাবে কি না সে আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে। কারণ ইতিহাসের আর কোনো বন্যায় এক তলা বাড়ি পানির নিচে ডুবে গেছে এমন কোনো নজির জানা নেই। বন্যাদুর্গত এলাকার পরিসর বাড়ছে স্পুটনিক গতিতে। শুক্রবার পর্যন্ত অন্তত ১৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন। জনবন্দি হয়ে পড়েছে ১০ লাখ পরিবার। বন্যার আগ্রাসন ভয়াবহভাবে বাড়ায় উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে সারা দেশের মানুষের মনে। হতাশা দেখা দিয়েছে বোদ্ধাজনদের মধ্যে। তবে ভয়াবহ এ বন্যা মোকাবিলায় যে জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠেছে তা হতাশার মধ্যে আশার দ্যুতি ছড়িয়েছে। মানুষ মানুষের জন্য এ উপলব্ধিতে জেগে উঠেছে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়ার ১৮ কোটি মানুষ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে ত্রাণ দিতে টিএসসিতে যে দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে তাতে অন্তত আশ্বস্ত হওয়া গেছে বন্যাদুর্গতরা একা নন। তাদের পাশে রয়েছে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে পুরো জাতি। ট্রলার-নৌকা যে যা পারছে তা নিয়ে ছুটে যাচ্ছে দুর্গতদের পাশে। বিতরণ করা হচ্ছে খাদ্য ও পানীয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ বাংলাদেশে টর্নেডো-জলোচ্ছ্বাসে লাখ লাখ মানুষের প্রাণহানির রেকর্ড খুব একটা কম নয়। সে তুলনায় এবারের বন্যা দৃশ্যত অনেক ছোট ঘটনা। তবে তা একটি বড় ঘটনার সূচনা করেছে। গড়ে উঠেছে সুদৃঢ় জাতীয় ঐক্য। যেমন ঐক্য আমরা অতীতে দেখেছি একাত্তরে। দেখেছি নব্বইয়ের গণ অভ্যুত্থানে। মহান জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান প্রমাণ করেছে ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। বন্যা মোকাবিলা শুধু নয়, দেশকে এগিয়ে নিতে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সুরক্ষায় ঐক্যকে কাজে লাগাতে হবে। যে কোনো মূল্যে এ ঐক্য অটুট রাখাও জরুরি।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর