রবিবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা

সড়কে চাঁদাবাজি

নিতে হবে শক্ত পদক্ষেপ

ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের জন্য চাঁদাবাজি নিত্যকার উপদ্রব। কমবেশি এ অত্যাচার থেকে রেহাই পান না কেউ। পথে-পথে, ঘাটে-ঘাটে চাঁদাবাজির কারণে চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়তে থাকে পণ্যমূল্য। পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধির শিকার হয় সাধারণ মানুষ। কৃষক মাঠে উৎপাদিত পণ্যের যে দাম পান, তাতে অনেক সময় উৎপাদন ব্যয় ওঠে না। অথচ সাত ঘাটে চাঁদাবাজির শিকার হয়ে পণ্যটি যখন বাজারে পৌঁছায়, দামের আঁচে গ্রাহকের ক্রয়ক্ষমতা ঝলসে যায়। সড়কে চাঁদাবাজির দৌরাত্ম্য দুর্বিষহ পর্যায়ে পৌঁছায় ঈদুল আজহার আগে কোরবানির পশু পরিবহনের ক্ষেত্রে। এদের জুলুমে পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধির বোঝাটা চাপে পশুর দামের ওপর। এ অপরাধ প্রকাশ্যেই চলে আসছে, প্রতিকার হচ্ছে না। কারণ, এর সঙ্গে জড়িত রাজনৈতিক পান্ডারা। গডফাদাররা থাকেন নেপথ্যে। ভাগবাঁটোয়ারার শর্তে সুযোগ করে দেয় পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের অসাধু ব্যক্তিরা। সড়কে চাঁদাবাজির এক মহাদুবর্ৃৃত্তকে নিয়ে প্রকাশিত খবরে দেখা যায়- এ পথেই তিনি হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির এই নেতার নেতৃত্বে রাজধানীর আশপাশে বিভিন্ন রুটে ১৫ হাজার বাস থেকে দৈনিক দেড় কোটি টাকার বেশি আদায় হতো। বছরের পর বছর এভাবে তিনি সপরিবারে বিশাল বিত্ত-বৈভবের মালিক হয়েছেন। দুদক তার বিরুদ্ধে অভিযোগের তথ্য-উপাত্ত পেলেও বারবার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন এবং লাল ফিতার শম্বুক গতির কারণে বছরের পর বছর গেলেও বিষয়টির ফয়সালা হয়নি। একই রকম অভিযোগ এক শ্রমিক নেতার বিরুদ্ধেও। ক্ষমতাসীন দলের ছত্রছায়াপুষ্ট এই চক্রের ষড়যন্ত্রে সরকারি বাস সার্ভিস বিআরটিসি প্রায় হারিয়ে গেছে বললেই চলে। আর দুষ্টচক্র ব্যক্তিমালিকানাধীন পরিবহনে অযৌক্তিক ভাড়া ধার্য করে প্রতিদিন কোটি যাত্রীর পকেট কেটে চলেছে। এসব যেন দেখার কেউ নেই। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান-পরবর্তী ভিন্নতর প্রেক্ষাপটে কদিন চাঁদাবাজি বন্ধ থাকায় পরিবহন ও বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছিল। দেশের সড়ক সংস্কারও এখন সময়ের দাবি। ক্ষমতার পালাবদলে চাঁদাবাজির হাত বদল হয়ে একই দুর্বৃত্তায়ন যেন চলতে না থাকে- তা নিশ্চিত করতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর