দেশে বন্যার পানি কোথাও বাড়ছে কোথাও কমছে। তবে সার্বিক পরিস্থিতি উন্নতির দিকে। পাশাপাশি রয়ে গেছে আশঙ্কাও। ত্রিপুরায় আবারও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে সে দেশের আবহাওয়া দপ্তর। অন্যদিকে ফারাক্কায় বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় বাঁধ রক্ষায় ১০৯টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে ফের বন্যা পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটবে কি না সে সম্পর্কে স্পষ্ট কোনো আভাস মেলেনি ভারতের পক্ষ থেকে। ফারাক্কায় বিপৎসীমার ৭২ ফুট স্তর অতিক্রম করেছে বেশ আগে। পানির স্তর ৭৬ ফুট উচ্চতায় ওঠায় বাঁধের গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। ভারত এ জন্য বাংলাদেশে বন্যা হবে না এমন কথা বললেও নদনদীতে পানি প্রাবহ বাড়ায় ভীতি দেখা দিয়েছে জনমনে। বাংলাদেশের মানুষের ধারণা ভারত ইচ্ছা করে পানি ছেড়ে বন্যার উদ্ভব ঘটাচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষের পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। বাঁধ ছেড়ে দিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে ডুবিয়ে দেওয়ার সমালোচনা যখন চলছে ভাটির দেশে, তখন অবশ্য ভারত বিবৃতি দিয়ে অস্বীকার করেছে। ফারাক্কা থেকে আসা পানি গঙ্গা হয়ে বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জে পদ্মা নদীতে প্রবেশ করে সীমান্তবর্তী পাংখা পয়েন্ট দিয়ে। সোমবার সেখানে পানির স্তর বিপৎসীমার নিচেই ছিল। তবে আশঙ্কার কথা হলো, ভারতের বিহারে গঙ্গার পানি দ্রুত বাড়ছে। এ বৃদ্ধি যদি অব্যাহত থাকে তবে আগামী এক সপ্তাহে কী পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে তা নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে। ভারতের দাবি তারা নিয়ম অনুযায়ী বাংলাদেশকে পানি ছাড়ার বিষয়ে সব তথ্য জানিয়েছে। বাংলাদেশে বন্যা পরিস্থিতির দৃশ্যত উন্নতি হলেও দুর্গত মানুষের দুর্ভোগ কমার ক্ষেত্রে তা কোনো অবদান রাখেনি। বন্যায় এ যাবৎ দেশের ৫৭ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩। দুর্গত এলাকায় পানীয় জলের সংকট বেড়েছে তীব্রভাবে। সরকারি-বেসরকারি ত্রাণ তৎপরতা চললেও সর্বত্র তা পৌঁছাচ্ছে বলার উপায় নেই। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর পুনর্বাসন তৎপরতা চালাতে হবে দ্রুততার সঙ্গে। রাস্তাঘাট স্থাপনা সংস্কারে নিতে হবে ত্বরিত ব্যবস্থা। সে ক্ষেত্রেও চালাতে হবে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস।